পাতা:গ্রহ-নক্ষত্র.pdf/২২৪

এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
১৭৬
গ্রহ-নক্ষত্র

তাঁহার মনে ঠিক বিশ্বাস হইল, সব ধূমকেতু পৃথিবী ছাড়িয়া চলিয়া যায় না। এক একটা নির্দ্দিষ্ট সময়ের শেষে আমাদের বারবার দেখা দেয় এ-রকম ধূমকেতুও অনেক আছে। কিন্তু এ-রকম একটা নূতন কথা ফস্ করিয়া বলা ঠিক্ নয়,—তাই কোন কোন ধূমকেতু বারবার পৃথিবীকে দেখা দিয়াছে, হ্যালি সাহেব তাহার হিসাবে লাগিয়া গেলেন।

 ইংরাজি ১৬৮২ সালে হ্যালি সাহেব জীবিত ছিলেন। ঐ বৎসরে একটা বড় ধূমকেতু দেখা গিয়াছিল। হ্যালি সাহেব হিসাব করিয়া দেখিলেন ১৫৩১ এবং ১৬০৭ সালে ঠিক্ ঐ রকমের বড় ধূমকেতুকে পৃথিবী হইতে দেখা গিয়াছিল। যে পথ ধরিয়া ঐ দুইটি ধূমকেতু সূর্য্যকে ঘুরিয়াছিল, তাহার সহিত ১৬৮২ সালের ধূমকেতুর পথেরও মিল ধরা পড়িল। এখন হ্যালি সাহেব উদাহরণ দিয়া নিজের কথাটি বলিবার সুবিধা পাইয়া গেলেন। তিনি অন্যান্য জ্যোতিষীদিগকে বলিলেন,—১৬৮২ সালের ধূমকেতুটি নূতন জিনিস নয়। ইহাই ১৫৩১ সালে এবং ১৬০৭ সালে আমাদিগকে এক-একবার দেখা দিয়া গিয়াছে। ইহা পঁচাত্তর বৎসর অন্তর এক একবার সূর্য্যকে ঘুরিয়া আসে, অতএব ১৭৫৭ বা ১৭৫৮ সালে তাহাকে আবার দেখা যাইবে।

 এমন ভবিষ্যদ্বাণী জ্যোতিষীরা আগে কখনই শুনেন নাই। হ্যালির কথা শুনিয়া সকলে অবাক্ হইয়া গেলেন। ১৭৫৭ সালে ধূমকেতুর উদয় হয় কিনা দেখিবার জন্য জ্যোতিষীরা প্রতীক্ষা করিতে লাগিলেন। কিন্তু হ্যালি সাহেবের আর প্রতীক্ষা করা হইল না। নিজের গণনা সত্য হইল কিনা তাহা তিনি জানিতে পারিলেন না। যে-সময়ে ধূমকেতুর ফিরিয়া আসিবার কথা ছিল, তাহার দশ বৎসর আগে ছিয়াশী বৎসর বয়সে হ্যালি সাহেবের মৃত্যু হইল।

 ক্রমে ১৭৫৭ সাল উপস্থিত হইল। ধূমকেতুর উদয় হয় কিনা দেখিবার জন্য চারিদিকে আয়োজন চলিতে লাগিল। ভাবিয়া দেখ,