পাতা:গ্রহ-নক্ষত্র.pdf/২৬৩

এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
নক্ষত্রদের আলো বাড়ে কমে কেন?
২১৩

নক্ষত্রদের ম্যাপ দেখিয়া দক্ষিণ আকাশে এই নক্ষত্রকে অনায়াসে বাহির করিতে পারিবে। এটি আরো মজার নক্ষত্র। সাধারণতঃ ইহাকে খুব উজ্জ্বল দেখা যায়, কিন্তু দশ মাস অন্তর ইহার আলো এমন কমিয়া যায় যে, তখন তাহাকে খালি চোখে দেখাই যায় না,—দেখিতে গেলে চোখে দূরবীণ লাগাইতে হয়! মজার ব্যাপার নয় কি?

 আজকালকার জ্যোতিষীরা নক্ষত্রদের এই রকম আলো কমা-বাড়া দেখিয়াই ক্ষান্ত হন নাই,—ইহার কারণও আবিষ্কার করিয়াছেন। তাহার কথা শুনিলে তোমরা অবাক্ হইয়া যাইবে।

 আমরা পূর্ব্বে বলিয়াছি, আকাশে যতগুলি উজ্জ্বল জীবন্ত নক্ষত্র দেখা যায়, তার চেয়ে অনুজ্জ্বল মরা নক্ষত্রই আকাশে বেশি আছে। জন্ম-মৃত্যুকে কেহই এড়াইতে পারে না। আজ যে সূর্য্য এত তাপ-আলো দিতেছে, লক্ষ লক্ষ বৎসর পরে সে তাহা দিতে পারিবে না, কারণ তখন তাহার তাপ ও আলোর ভাণ্ডার একেবারে খালি হইয়া পড়িবে,—সূর্য্য নিভিয়া যাইবে। আমাদের চাঁদ ও বুধগ্রহ এই রকমেই নিভিয়া মরিয়া গিয়াছে। তাহাদের গায়ে একটুও তাপ নাই এবং নিজেদের আলো দিবার ক্ষমতাও নাই। পৃথিবী, মঙ্গল ও শুক্রেরও সেই দশা উপস্থিত হইতেছে।

 তাহা হইলে বুঝিতে পারিতেছ, এই মহাকাশটা যেন গ্রহ-নক্ষত্রদের শ্মশান-ক্ষেত্র। জীব-জন্তু গাছ-পালা মরিলে পচিয়া নষ্ট হয়, লোকে পুড়াইয়া ফেলে বা মাটিতে পুঁতিয়া রাখে। কাজেই তাহাদের মৃতদেহের একটু চিহ্নও পৃথিবীর উপরে থাকে না। কিন্তু অনাদি কাল হইতে যে হাজার হাজার নক্ষত্র নিভিয়া ঠাণ্ডা হইয়া মরিতেছে, তাহারা ত এরকমে নষ্ট হইতেছে না; মরিয়া গেলেও তাহাদের শুক্‌নো হাড়গোড়-সার প্রকাণ্ড প্রকাণ্ড দেহগুলা আকাশের অন্ধকারের মধ্যে যেখানে সেখানে ছড়াইয়া থাকিতেছে। জীবন্ত নক্ষত্রদের সংখ্যা করা যায়, না হয় সংখ্যার