রাজ্য ছাড়িবে না। রাজা ভয়ানক চিন্তিত হইয়া পড়িলেন। প্রজারা বিদ্রোহী হইয়া রাজবাড়িতে আসিয়া এন্ড্রোমিডার খোঁজ করিতে লাগিল।
রাজা ও রাণী কন্যাকে কিছুক্ষণ লুকাইয়া রাখিয়াছিলেন বটে, কিন্তু একেবারে সকলকে ফাঁকি দিতে পারিলেন না। মত্ত প্রজারা এন্ড্রোমিডাকে ধরিয়া ফেলিল এবং নদীর ধারের এক পাহাড়ে শিকল দিয়া বাঁধিয়া রাখিল। তাহারা ভাবিতে লাগিল, সেই রাক্ষসটা রাত্রিতে এন্ড্রোমিডাকে খাইয়া পরদিন দেশ ছাড়িয়া পলাইয়া যাইবে।
রাজা ও রাণী এন্ড্রোমিডার জন্য কাঁদিয়া কাঁদিয়া পাগলের মত হইয়া গেলেন এবং এন্ড্রোমিডা হাতে পায়ে শিকল পরিয়া একলাটি কাঁদিতে লাগিলেন।
রাত্রি দুপুর হইয়া গিয়াছে, কাঁদিতে কাঁদিতে বোধ হয় এন্ড্রোমিডার একটু ঘুম আসিয়াছিল;—এমন সময়ে খুব বড় একটা পাখীর ডানার ঝট্পট্ শব্দে তাঁর ঘুম ভাঙিয়া গেল। তিনি মনে করিলেন, এইবার বুঝি রাক্ষস আসিল। ভয়ে ভয়ে চোখ খুলিলেন, কিন্তু রাক্ষসকে দেখিতে পাইলেন না। দেখিলেন, এক পরমসুন্দর বীরপুরুষ তীর-ধনুক হাতে করিয়া সম্মুখে দাঁড়াইয়া আছেন। তাঁর পায়ের খড়মের সঙ্গে দুটা পাখীর ডানা বাঁধা,—সেই ডানায় ভর করিয়া তিনি কোথা হইতে উড়িয়া আসিয়াছেন। বীরপুরুষ নিজের পরিচয় দিয়া বলিলেন, তাঁহার নাম পার্সুস্, বিপদের কথা শুনিয়া রাজকন্যাকে উদ্ধার করিতে আসিয়াছেন।
পার্সুস্কে কাছে পাইয়া এন্ড্রোমিডা খুব খুসী হইলেন এবং তাঁর ভয়ও কমিল। পার্সুস্ রাজকুমারীকে ভরসা দিয়া নিকটের এক জঙ্গলের মধ্যে লুকাইয়া রহিলেন।
রাত্রি যখন প্রায় শেষ হইয়া আসিয়াছে, তখন হাতীর ডাকের মত একটা শব্দে এন্ড্রোমিডা চম্কাইয়া উঠিলেন। নদীর দিকে তাকাইয়া