পাতা:গ্রাম্য উপাখ্যান - রাজনারায়ণ বসু.pdf/১০৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
গ্ৰাম্য উপাখ্যান ।
৬১

ব্রাহ্মণ পণ্ডিতগণ সুস্থকায়, দ্রড়িষ্ঠ ও বলিষ্ঠ ছিলেন, কিন্তু আজকালের সেক্‌সপিয়ার ও মিলটন অধ্যায়ী, চায়নাকোট ও বুট পরিধায়ী, মিউনিসিপাল ওয়ালা, বাহাদুর উপাধিধারী বাবুরা অতি অপদার্থ জীব, দেখিতে কৃশকায়, এক একজন যেন অজীর্ণতার অবতার, তাঁহাদের যাহা কিছু আয় হয় তাহা ডাক্তার ও ঔষধ বিক্রেতার উদর পূরণে ব্যয়িত হয়। সে কালের নদীয়ার পণ্ডিতেরা যেমন প্রচুর পরিমাণে স্মৃতি আহার করিতে পারিতেন, তেমনি রাশিকৃত লুচিও খাইতে পারিতেন। উভয়েরই প্রতি তাঁহারা সমান সুবিচার করিতেন। ইহা দ্বারা নিঃসংশয়িতরূপে প্রমাণিত হয় যে তাহাদের উদরটী যেমন ফলাও, মস্তিষ্কও তেমন প্রশস্ত ছিল, এবং তাঁহাদের শরীর যেমন বলিষ্ঠ, বুদ্ধিশক্তিও তেমনি তেজস্বী ছিল। কিন্তু প্রবেশিকা পরীক্ষা দিয়া সেনেট হাউস হইতে ঐ যে লিলিপট্‌বাসীদিগের ন্যায় খর্ব্বকায় দ্বিপদ জীবগুলি বাহির হইয়া আসিতেছে উহাদিগের প্রতি একবার চাহিয়া দেখ। উহাদিগকে দেখিলে বোধ হয় যেন উহারা পার্শ্বস্থ হাঁসপাতালে যাইবার মনস্থ করিয়াছিল, ভ্রমক্রমে সেনেট হাউসে প্রবেশ করিয়াছে। যতই শিক্ষা ও সভ্যতার বৃদ্ধি হইতেছে, ততই আমাদিগের বিশ্ববিদ্যালয়—প্রসূত ছাত্রগণ রুগ্ন ও কৃশতনু হইয়া যাইতেছে।”

 মধুসূদন বসুজা মহাশয় উদোমাদা লোক ছিলেন। একদা তাঁহার কোন পীড়া হওয়াতে তাঁহার কোন বন্ধু