খাওয়া সভ্যতা ও সমাজ-সংস্কারের পরাকাষ্ঠা-প্রদর্শক কার্য্য মনে করিতেন। একদা রামনারায়ণ বাবু গোলদিঘিতে মদ খাইয়া টুপভুজুঙ্গ হইয়া রাত্রিতে বাটীতে আসাতে তাঁহার মাতা ঠাকুরাণী অতিশয় বিরক্ত হইয়া বলিলেন, “আমি আর কলিকাতার বাসায় থাকিব না, বাদলগ্রামের বাটীতে গিয়া থাকিব।” আনন্দ বাবু পুত্ত্রের আচরণের বিষয় অবগত হইয়া তাঁহাকে পরিমিত মদ্যপায়ী করিবার জন্য একটা কৌশল অবলম্বন করিলেন। সেই কৌশল অবলম্বন করাতে রামনারায়ণ বাবু প্রথম জানিতে পারিলেন যে বাবারও যবনস্পৃষ্ট আচার চলে। মদ্য পান বিষয়ে রামমোহন রায়ের শিষ্য ও হিন্দু কালেজের ছাত্রাদিগের মধ্যে প্রভেদ ছিল। রামমোহন রায়ের শিষ্যেরা অত্যন্ত পরিমিতপায়ী ছিলেন, হিন্দু কালেজের অধিকাংশ ছাত্র এরূপ ছিলেন না। একবার রামমোহন রায়ের কোন শিষ্য অপরিমিত মদ্য পান করাতে রামমোহন রায় ছয় মাস তাহার মুখ দর্শন করেন নাই। আনন্দ বাবু পুত্ত্রকে পরিমিতপায়ী করিবার জন্য যে কৌশল অবলম্বন করিলেন তাহা বর্ণিত হইতেছে। সে কালে মুন্সী আমির আলি সদর দেওয়ানি আদালতের একজন প্রধান উকীল ছিলেন। এই মুন্সী আমির আলি পরে সিপাহী বিদ্রোহের সময় গবর্ণমেণ্টের উপকার করাতে নবাব উপাধি প্রাপ্ত হয়েন। যে বাটীতে সদর দেওয়ানী আদালত বসিত, সেই বাটীতেই
পাতা:গ্রাম্য উপাখ্যান - রাজনারায়ণ বসু.pdf/১১৭
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
গ্রাম্য উপাখ্যান
৭১
