ঘটনা বিবৃত করিতে বাধ্য হইয়াছিলাম। আমরা এক্ষণে ধর্ম্মসংস্কার, সমাজসংস্কার, খানা খাওয়া মদ খাওয়া ইত্যাদি বিপ্লাবক ব্যাপার পরিত্যাগ করিয়া এমন এক ব্যক্তির জীবনবৃত্ত লিখিতে প্রবৃত্ত হইতেছি যিনি শান্ত ভাবে শাস্ত্র চর্চ্চায়, পরোপকারে, তাঁহার সমস্ত জীবন অতিবাহিত করিয়া ছিলেন। আমরা এক্ষণে কলিকাতা পরিত্যাগ করিয়া প্রান্তর, উপবন ও উদ্যান মধ্যে সংস্থিত পল্লীগ্রামে প্রত্যাগমন করিলাম। হরিহর বসু বাল্যকালে অতি অল্পই ইংরাজী পড়িয়াছিলেন। কিন্তু সংস্কৃত উহার মধ্যে উত্তমরূপে শিখিয়াছিলেন। আমরা পূর্ব্বে অন্য এক ব্যক্তির জীবন চরিতে উল্লেখ করিয়াছি যে হরিহর বসু নবযৌবন সময়ে রামমোহন রায়ের গ্রন্থ পড়িয়াছিলেন, কিন্তু তাহা তাঁহার ধর্ম্মবিষয়ক মত বিশেষরূপে বিচলিত করিতে পারে নাই। হরিহর বসুর যখন তেইশ বৎসর বয়ঃক্রম তখন তিনি বায়ু অর্থাৎ স্নায়ুদৌর্ব্বল্য রোগ কর্ত্তৃক আক্রান্ত হয়েন। তদবধি তাঁহার মৃত্যুকাল চৌষট্টি বৎসর বয়স পর্য্যন্ত তিনি আদৌ কলিকাতায় আসেন নাই। ইংরাজী ১৮৬৭ শালে তাঁহার মৃত্যু হয়॥ তিনি বাল্যকালে কলিকাতা যেরূপ দেখিয়াছিলেন তাহা অপেক্ষা তাঁহার মৃত্যুকালে নগরের যে কত শোভা ও উন্নতি সাধিত হইয়াছিল তাহা বলা যায় না, কিন্তু তিনি সে সকল উন্নতি কখন চাক্ষুষ প্রত্যক্ষ করেন নাই, বাদল গ্রামে চিরকাল কাটাইয়াছিলেন। স্নায়ুদৌর্ব্বল্য প্রযুক্ত তিনি পালকী
পাতা:গ্রাম্য উপাখ্যান - রাজনারায়ণ বসু.pdf/১২৩
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
গ্রাম্য উপাখ্যান
৭৭
