পাতা:গ্রাম্য উপাখ্যান - রাজনারায়ণ বসু.pdf/১৩৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
গ্রাম্য উপাখ্যান।
৮৭

চিহ্ন মাত্র নাই। উল্লিখিত আটচালায় আমার জেঠা মহাশয় আমাকে আপনার হাঁটুর উপর বসাইয়া চাণক্য শ্লোক ও “গাড ঈশ্বর” “লাড ঈশ্বর” পড়াইতেন। যখন উক্ত প্রকাণ্ড আটচালা ভাঙ্গিয়া বৈঠকখানা ঘর তৈয়ারী হইতেছিল তখন তাহার সম্মুখে যে একটা ক্ষুদ্র আটচালা ছিল তথায় মাদুরের উপর শুইয়া মেকলে পড়িতাম। ঐ প্রকাণ্ড আটচালা ভাঙ্গিয়া বাটীতে প্রবেশ পথের দুইদিকে দুইটা বৈঠকখানা ঘর তৈয়ারী হয়, উক্ত পথ ও উক্ত দুইটী বৈঠকখানা এক ছাদের নিম্নে স্থিত। ঐ দুই ঘরের মধ্যে যে ঘরে আমি বসিতাম তাহাতে প্রবেশ করিবামাত্র পূর্ব্বকালের কত কথা যে মনে হইল তাহা কি বলিব? এই ঘরে বসিয়া আমি গোলিবাটীর অভয় চরণ নামক যুবক ভট্টাচার্য্যের সহিত কথোপকথন করিতাম। তিনি সে সময়ে নবদ্বীপে ন্যায়শাস্ত্র অধ্যয়ন করিতেন। তাঁহার নিকট আমি প্রথম জানিলাম যে নবদ্বীপ আমাদের বঙ্গদেশের অক্সফোর্ড, তথায় কর্ণাট, বিষ্ণু, কাঞ্চী ও পঞ্জাবের ছাত্র আসিয়া অধ্যয়ন করে এবং তাহারা বঙ্গদেশের ছাত্রদিগের সহিত সংস্কৃতে কথোপকথন করে। এই ঘরে বসিয়া সঙ্গীতশাস্ত্রনৈপুণ্যাভিমানী সুসভ্য ভরত মালী, যাঁহাকে আমি মালীপো বলিয়া ডাকিতাম। কিন্তু গ্রামস্থ লোক মালীদাদা বলিয়া ডাকিত তিনি আমার পিতা আনন্দকিশোর