পাতা:গ্রাম্য উপাখ্যান - রাজনারায়ণ বসু.pdf/৫৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
গ্ৰাম্য উপাখ্যান ।

এবং বরের পালকী ভাঙ্গিয়া পুষ্করিণীতে ফেলিয়া দিয়াছিল। বরকে পদব্রজে ভাবী শ্বশুরালয়ে যাইতে হইয়াছিল। দ্বিতীয় ঘটনাটী এই;—গ্রামের নাগবংশীয় কোন মহাত্মা ব্যক্তির ধোবা পুষ্করিণীর তীরবাসী কোন ধোবার স্ত্রীর সহিত প্রসক্তি হওয়াতে ধোবার পাটের উপরে তাহাকে ফেলিয়া পাটে যেরূপ কাপড় আচড়ায় কুপিত স্বামী সেইরূপ তাহার শরীরের উপর কাপড় আচড়াইয়া তাহাকে মারিয়া ফেলিয়াছিল। ধোবা পুষ্করিণীর কিছু দক্ষিণে সরল নামে একটী বৃহৎ সরোবর আছে। সর শব্দে পুষ্করিণী বুঝায়। এই শব্দ হইতে, কিম্বা পুষ্করিণীটা সরল চতুষ্কোণাকৃতি এই জন্য উহার নাম সরল হইয়াছে কিনা তাহা পুরাতত্ত্ববিশারদ পণ্ডিতদিগের বিচারার্থ অর্পিত হইল। এই সরল পুষ্করিণীর উপকূলস্থ বনের ভিতর ককাইচণ্ডী নাম্নী দেবীর ক্ষুদ্র মন্দির আছে। দেবীর নাম ককাইচণ্ডী, তাহার কারণ এই যে তিনি সর্ব্বদা ককিয়া আছেন, অর্থাৎ জিব বাহির করিয়া আছেন। গ্রামের কোন ব্যক্তিকে কোন কারণ বশতঃ এক দিন দুপুর রাত্রে ঐ বনমধ্য দিয়া আসিতে হইয়াছিল। তৎপর দিন তিনি বলিলেন যে, তিনি উহার মধ্য দিয়া আসিতে আসিতে দেখিলেন যে, ককাইচণ্ডীর স্বামী মহাজটাজুটসমন্বিত কালভৈরব দুইটা জ্বলন্ত লৌহদণ্ড পরস্পর প্রতিঘাত করিয়া সহস্র সহস্র মহাস্ফুলিঙ্গ বাহির করিয়া বন আলোকিত করিতেছেন।