পরম্পরায় চলিয়া আসিতেছে তেমনি বঙ্গদেশের উক্ত ক্ষুদ্র দেওয়ানি পদও বংশপরম্পরায় চলিয়া আসিত। এই প্রথার জের এমন কি অপেক্ষাকৃত আধুনিক কাল পর্য্যন্ত টানিয়াছিল। অনেকে অবগত আছেন বাবু রামকমল সেনের মৃত্যুর পর ক্রমান্বয়ে তাঁহার তিন পুত্র হরিবাবু প্যারীবাবু ও বংশী বাবু টেঁকশালের দেওয়ান হইয়া ছিলেন। বংশী বাবুর পর হরি বাবুর জ্যেষ্ঠ পুত্র যদু বাবু দেওয়ান হন। যদু বাবু জয়পুরে যাত্রা করিলে পরিশেষে বিখ্যাত কেশব বাবু পর্য্যন্ত কিছুদিন উক্ত দেওয়ানি কর্ম্ম করেন। শিবনারায়ণ ঘোষের সতের বৎসর বয়সে তাঁহার পিতার মৃত্যু হয়। তিনি সেই বয়সে হাতের বালা ও কাণের মাকড়ি খুলিয়া দেওয়ানী করিতে যান। ঢাকা নগরে তাহার বাসাবাটিতে তিনি একটী অতি বৃহৎ ঘণ্টা ঝুলাইয়া দিয়াছিলেন। প্রতিদিন আহারের সময় সেই ঘণ্টার বিশাল রব শুনিয়া ঢাকার বাসাড়ে ভদ্রলোক তাঁহার বাটী আসিয়া আহার করিত। প্রতিদিন প্রায় তিন চারি শত পাত পড়িত। নরনারায়ণ ঘোষ নিজে দেওয়ানি করেন নাই। তিনি বাদল গ্রামে থাকিয়া বাটীর কাজ দেখিতেন। সেকালে বড় ভাই কাজ কর্ম্ম করিতেন, ও ছোট ভাই বাটীতে থাকিয়া বাটীর তত্ত্বাবধান করিতেন, এইরূপ প্রথা ছিল। এখনও পল্লীগ্রামের অনেক স্থানে এইরূপ প্রথা আছে। সেকালে কলিকাতায় মিউনিসিপাল
পাতা:গ্রাম্য উপাখ্যান - রাজনারায়ণ বসু.pdf/৬২
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১৬
গ্ৰাম্য উপাখ্যান ।
