রামমোহন রায়ের গ্রন্থ পড়ছিস্” এই বলিয়া তাঁহার হাত হইতে তাহা কাড়িয়া লইয়া পুকুরের মধ্যে ফেলিয়া দিয়াছিলেন। হরিহর বসু ও তাঁহার সঙ্গীগণ বেদান্ত শাস্ত্রের ও রামমোহন রায় প্রবর্ত্তিত ব্রাহ্মধর্ম্মের আলোচনা সর্ব্বদাই করিতেন বলিয়া গ্রামে তাহাদিগের নাম ব্রহ্মজ্ঞানীর দল হইয়াছিল। বাজারীয়া দলের লোকেরা গ্রামের ঠনঠনিয়া বাজারে বসিয়া গাঁজা খাইতেন ও বাজারের লোকের নিকট হইতে তোলা তুলিয়া জীবিকা নির্ব্বাহ করিতেন। এই কথা ব্রহ্মজ্ঞানীর দলের লোকেরা শ্রীরামপুরের মার্শমান সাহেবের সম্পাদিত “সমাচার-দর্পণে” ছাপাইয়া দেন। এই সমাচারদর্পণ বাঙ্গালা ভাষায় সম্পাদিত দ্বিতীয় সংবাদপত্র। সর্ব্ব প্রথমে বাঙ্গালা ভাষায় যে সংবাদপত্র প্রকাশিত হয় তাহার নাম “বেঙ্গল গেজেট”; গঙ্গাধর ভট্টাচার্য্য তাহার সম্পাদক ছিলেন। সমাচার-দর্পণে ঐ সংবাদ প্রকাশিত হওয়াতে দারগা গ্রামে আসিয়া সুরথাল করে। বাজারীয়া দলের লোকেরা অতি ন্যায়বান ছিলেন। বর্গীরা অধীনস্থ রাজাদিগের নিকট হইতে “চৌত” অর্থাৎ তাঁহাদিগের আয়ের চতুর্থাংশ লইত। কিন্তু ইহারা বাজারে যে সকল লোক আসিত তাহাদিগের নিকট হইতে তাহাদিগের দ্বারা বিক্রীত দ্রব্যের যে অংশ লইতেন তাহা চৌতের সহিত তুলনা করিলে অতি অল্প। তাঁহারা বাজারের লোকদিগকে বলিতেন, “তোরা মজা করিয়া খাইবি, আর আমরা
পাতা:গ্রাম্য উপাখ্যান - রাজনারায়ণ বসু.pdf/৬৮
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
২২
গ্ৰাম্য উপাখ্যান ।
