মাথা ঘোরা ও বুক দুর দুর সংযুক্ত থাকে। যদি কেহ দরজা ঝনাৎ করিয়া বন্ধ করিল এই রোগগ্রস্ত ব্যক্তি তাহাতে ভয়ে আকুল হয়েন। যদি তিনি অপর কোন ব্যক্তিকে রাস্তায় দৌড়িয়া যাইতে দেখেন তাহা হইলে তাহার বুক্ গুর গুর করে। এই রোগগ্রস্ত কোন ব্যক্তি এক তেতলার ছাদের উপর বসিয়া আমাদিগকে বলিয়াছিলেন, “আমার ভয় হইতেছে এট তেতলার বাটী পাছে হঠাৎ পড়িয়া যায়।” এইরূপ রোগগ্রস্ত আর এক ব্যক্তি সর্ব্বদা আশঙ্কা করিতেন যে ছাদের নিম্নভাগ হইতে একটা ইট তাঁহার মাথার উপর খসিয়া পড়িবে। আহারের সঙ্গে কোন অনিষ্টকর দ্রব্য মিশ্রিত হইবার কোন সম্ভাবনা না থাকিলেও এরূপ রোগগ্রস্ত ব্যক্তিরা মনে করেন যে তাহার সঙ্গে তাহা মিশাইয়া পড়িয়াছে। এই রোগগ্রস্ত ব্যক্তিদিগের সর্বদা অকারণ ভয় ও অকারণ সন্দেহ। এই রোগের অবস্থার পর অবস্থা আছে। ইহার চরম অবস্থা শূন্যে অসংখ্য বিকট মূর্ত্তি দেখা। কিন্তু এই পীড়ার সকল অবস্থাতে জ্ঞান থাকে। রোগী কখন জ্ঞান হারায় না। ইহা আরও যন্ত্রণার কারণ হইয়া উঠে। স্পষ্ট উন্মাদাবস্থায় লোকে জ্ঞান হারায়, যাতনা অধিক অনুভব করিতে পারে না, কিন্তু এই পীড়াতে জ্ঞান থাকাতে রোগী অতিশয় যন্ত্রণা অনুভব করে। এই পীড়া নিরাকার পীড়া। অন্য পীড়া ইহার সহিত সংযুক্ত না থাকিলে
পাতা:গ্রাম্য উপাখ্যান - রাজনারায়ণ বসু.pdf/৭৮
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৩২
গ্ৰাম্য উপাখ্যান ।
