পাতা:গ্রাম্য উপাখ্যান - রাজনারায়ণ বসু.pdf/৮৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৪০
গ্ৰাম্য উপাখ্যান ।

এই তিনটা গ্রাম লইয়া বর্ত্তমান কলিকাতা সংরচিত। তৃতীয় উইলিয়ম রাজার রাজত্বকালে ১৬৯৮ অব্দে কলিকাতার ফোর্ট উইলিয়াম কেল্লা ঐ গোবিন্দপুর গ্রামে নির্ম্মিত হয়। সেই অবধি ঐ গ্রামের নাম গড় গোবিন্দপুর হয়। ফোর্ট উইলিয়ম দুর্গ নির্ম্মাণ জন্য যে যে লোকের জমি লওয়া হয় তাহাদিগকে সেই সেই জমির পরিবর্ত্তে ইংরাজ গবর্ণমেণ্ট সুতানুটি ও খাস কলিকাতায় জমি দেন। পূর্ব্বে মহারাষ্ট্রীয় খাত (Moharatha Ditch) এবং পশ্চিমে জগন্নাথের ঘাট ইহার মধ্যস্থিত বৃহদায়তন ভূমিখণ্ডের নাম সুতানুটি ছিল। দুর্গ নির্ম্মাণ জন্য যাঁহারা গোবিন্দপুর হইতে তাড়িত হয়েন তাঁহাদিগের মধ্যে গোবিন্দপুরের বসু বংশীয় লোকেরা ছিলেন। ইহাঁরা নিজ নিজ পৈতৃক জমির পরিবর্ত্তে কলিকাতার এথেন্স (Athens) সিমুলিয়া, দারমাহাটা ও বাগবাজারে জমি প্রাপ্ত হয়েন। কলিকাতার সিমলা অঞ্চলে কৃষ্ণমোহন বন্দ্যোর গির্জ্জা, ডফ্‌সাহেবের স্কুল,”ও “ভারতবর্ষীয় কবি” উপাধিধারী কাশী প্রসাদ ঘোষের বাটী থাকাতে পূর্ব্বে কোন কোন বিদ্বান্ ব্যক্তি ঐ স্থানকে কলিকাতার এথেন্স বলিয়া ডাকিতেন। এক্ষণে পটলডাঙ্গা ঐ নামের উপযুক্ত। সে কালে সিমুলিয়াবাসী বসুদিগের মধ্যে প্রাণকৃষ্ণ বসু, দরমাহাটার বসুদিগের মধ্যে নয়ানচন্দ্র বসু, এবং বাগবাজারের বসুদিগের মধ্যে কাশীনাথ বসু প্রধান ছিলেন। নয়ানচন্দ্র বসু তাঁহার বৃহৎ অট্টালিকা জন্য বিখ্যাত ছিলেন।