পাতা:গ্রীক ও হিন্দু - প্রফুল্লচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৭৭২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ՊՏՆ, গ্রীক ও হিন্দু। ব্রত অবলম্বন করিতে পারেন, যেহেতু তখন অন্য বস্তুতে আর প্রয়োজন থাকে না। ব্ৰহ্মজ্ঞানলব্ধ ব্যক্তি সন্ন্যাস গ্রহণ না করিয়া গৃহস্থ আশ্রমেও থাকতে পারেন, এবং নিষ্কামভাবে অর্থাৎ কার্য্যের ফলহেতুক শুভাশুভ ঈশ্বরে অর্পণ করিয়া এবং সকল-নিস্ফলতায় সমানচিত্ত-প্রসাদযুক্ত হইয়া কৰ্ম্মকাণ্ড অনুসরণ করতে পারেন (১৮) । নানা-নাম-বিশিষ্ট নদীসমূহ প্রত্যকে পৃথক পৃথক্ হইলেও, সমুদ্রে পতিত হইলে পর আর যেমন তাহদের পৃথকত্ব থাকে না, মায়াপাশছিন্ন জীবাত্মাও পরমাত্মায় তদ্রুপ গতি লাভ করিয়া থাকে ।(১৯) কিন্তু কথিত হইয়াছে যে, উহা কৰ্ম্মকাণ্ড দ্বারা সাধিত হয় না। পরমাত্মা যখন বাক্য মন নেত্র কর্ণাদির অগোচর, তখন একমাত্র তত্বজ্ঞান, যাহাতে র্তাহার অস্তিত্ব জ্ঞাপন করিতেছে, কেবল তাহার দ্বারাই র্তাহাকে জ্ঞাত হওয়া যায়। যখন জীবাত্মা নিষ্কাম হইয়া কেবল পরমাত্মায় ঐকাস্তিক অভিনিবেশবশতঃ আমিই অন্ন, আমি অন্নের ভোক্তা, আমি তাহার একীভূত করণ, আমিই বিশ্বের আদিতে জন্মগ্রহণ করিয়াছি, দেবতাদিগের পূর্ব হইতেও আমি অমৃতত্ব ভোগ করিতেছি, (১৮) ভগবদগীতায় ( ৫৩ ) সন্ন্যাসীর স্বভাব এরূপ বর্ণিত হইয়াছে। "জ্ঞেয়: স নিত্যঃ সন্ন্যাসী যো ন দ্বেষ্টি ন কাজক্ষতি নিদ্বন্থোহি মহাবাহো সুখং বন্ধাৎ প্রমুচ্যতে ॥ ইহা ২১৭-১৮ গ্লোকের যদিও কিঞ্চিৎ বিরোধী, তথাপি তৎপরে ও পূর্বে জ্ঞানলাভ সত্ত্বেও কর্মের আবশ্বৰতা দেখান হইয়াছে। ২২৫ অজ্ঞান ব্যক্তি যক্রপ কৰ্ম্মে রত থাকে, জ্ঞানযুক্ত ব্যক্তিও তক্রপ লোকবিতার্থে, লোকসংগ্ৰহাৰ্থে এবং অজ্ঞান ব্যক্তিদিগকে প্রবৃত্তিপ্রদানার্থে কৰ্ম্মের অনুষ্ঠান করিবেন। (১৯) মায়াতে আবদ্ধ আত্মা ও পরমাত্মার কিরূপ সম্বন্ধে, তাহা অতি মুন্দরভাবে একবৃক্ষারূঢ় পক্ষিদ্বয়ের রূপকে, ঋগ্বেদেব অস্তবানীয় স্বল্প ও শ্বেতাশ্বতর উপনিষদে দেখান হইয়াছে, ‘দ্বাস্বপর্ণস্বযুজা' ইত্যাদি ।