পাতা:ঘরোয়া.djvu/১০৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

অনেকগুলো ক্যারেক্‌টারেরও সৃষ্টি হল। হেমাঙ্গিনীকে রাখলেন একেবারে নেপথ্যে। তা ছাড়া তখন মেয়েই বা কই অ্যাকটিং করবার। তাই হেমাঙ্গিনীকে আর বেরই করলেন না। সেবারে লেখায় কতকগুলো এমন মজার ‘ডায়লগ’ ছিল, সেই স্টেজ-কপির পিছনেই উনি লিখেছিলেন বাড়তি অংশটুকু। ভারি অদ্ভুত অদ্ভুত ডায়লগ সব। অলীকবাবু বলছেন এক জায়গায়, একেবারে তাঁহা তাঁহা লেগে যাবে। তাঁহা তাঁহা মানে কী তা তো জানি নে, কিন্তু ভারি মজা লাগত শুনতে। আরো কত সব এমনিতরো কথা ছিল।

 তা, অভিনয় তো হবে, রয়েল থিয়েটারের সাহেব-পেণ্টারকে বলে বলে পছন্দ-মাফিক সিন আঁকালুম। স্টেজ খাড়া করা গেল। নাট্যজগতে সাহিত্যজগতে সেই আমরা এক-এক মূর্তি দেখা দিলুম। রবিকাকা নিলেন অলীকবাবুর পার্ট, আমি ব্রজদুর্লভ, অরুদা মাড়োয়ারি দালাল। রবিকাকার ঐ তো সুন্দর চেহারা, মুখে কালিঝুলি মেখে চোখ বসিয়ে দিয়ে একটা অত্যন্ত হতভাগা ছোঁড়ার বেশে স্টেজে তিনি বেরিয়েছিলেন। হেসো না, আমাকে আবার পিসনী দাসীর পার্টও নিতে হয়েছিল। আমার ব্রজদুৰ্লভের পার্ট ছিল খুব একটা বখাটে বুড়োর। হেমাঙ্গিনীকে বিয়ে করতে আসছে একে একে এ ও। আমি, মানে ব্রজদুর্লভ, তাদেরই একজন! গায়ে দিয়েছিলুম নীল গাজের জামা—আমার ফুলশয্যার সিল্কের জামা ছিল সেটা—তখনকার চলতি ছিল ঐ রকম জামার। সোনার গার্ড-চেন বুকে, কুঁচিয়ে ধুতির কোঁচটি কালাচাঁদবাবুর মতো বুকপকেটে গোঁজা যেন একটি ফুল, হাতে শিঙের ছড়ি ঘোরাতে ঘোরাতে স্টেজে ঢুকলুম। একটু-একটু মাতলামি ভাব। এখন সেই পার্টে আমার একটা গান ছিল, রবিকাকার দেওয়া সুর—

আগে, কী জানি বল
নারীর প্রাণে সয়’গো এত।
কাঁদাব মনে করি
ছি ছি সখি, কাঁদি তত।

১০২