কোত্থেকে যে ও গান জোগাড় করেছিলেন তা উনিই জানেন। আমার গলায় ও সুর এল না। আমি বললুম, ও আমি গাইতে পারব না, ও সুর আমার গলায় আসবে না। রবিকাকা বললেন, তবে তুমি নিজেই যা হয় একটা গাও, কিন্তু এই ধরনের হবে। আমি বললুম, আচ্ছা, সে আমি ঠিক করব’খন।
রাধানাথ দত্ত বলে একটি লোক প্রায়ই এখানে আসতেন, মদটদ খাওয়া অভ্যেস ছিল তাঁর। তাঁর মুখে একটা গান শুনতুম, জড়িয়ে জড়িয়ে গাইতেন আর ছড়ি ঘুরিয়ে চলতেন। আমি ভাবলুম, এই ঠিক হবে, আমিও মাথায় চাদর জড়িয়ে ছড়ি ঘোরাতে ঘোরাতে রাধাবাবুর হুবহু নকল করে স্টেজে ঢুকে গান ধরলুম—
আয় কে তোরা যাবি লো সই
আনতে বারি সরোবরে।
এই দুই লাইন গাইতেই চারি দিক থেকে হাততালির উপর হাততালি। রাধাবাবুর মুখ গম্ভীর। সবাই খুব বাহবা দিলে। রবিকাকা মহা খুশি; বলেন, বেড়ে করেছ অবন, ও গানটা যা হয়েছে চমৎকার! আর সত্যিই আমি খুব ভালো অভিনয় করেছিলুম।
এই নাটকেই প্রথম সেই গানটি হয়, রবিকাকা তৈরি করে দিলেন, আমরা অভিনয়ের পর সবাই স্টেজে এসে শেষ গানটি করি—
আমরা লক্ষ্মীছাড়ার দল
ভবের পদ্মপত্রে জল
সদা করছি টলোমল।
গানের সঙ্গে সঙ্গে নাচও চলেছিল আমাদের। কী যে জমেছিল অভিনয় তা কী বলব। কিন্তু ঐ রাধানাথের গানই হল আমাদের কাল। রাধানাথ দত্ত গেলেন খেপে। তিনি বাড়ি বাড়ি, এমন-কি আমার শ্বশুরবাড়ি পর্যন্ত গিয়ে রটালেন যে ছেলেরা সব বুড়োদের নকল করে তামাশা করেছে। সবাই অনুযোগ-অভিযোগ আনতে লাগলেন। এ তো বড়ো বিপদ হল। কী করে তাঁদের বোঝাই যে আমরা কেউ আর-কারো
১০৩