বাড়ি। চা ও খাবার একপেট খেয়ে তার পর রিহার্সেল শুরু হত।
রবিকাকা সেজেছেন বাল্মীকি, আমরা সব ডাকাত, অক্ষয়বাবু দস্যু-সর্দার, বিবি লক্ষ্মী, প্রতিভাদিদি সরস্বতী, অভি হাতবাঁধা বালিকা। জোর রিহার্সেল চলছে।
সেখানে একদিন একটা কাপ্তেন এসেছিল, কাবুলীদের নাচ দেখালে। সে কী জবরদস্ত শরীর তাদের; টেনিস খেললে, তা এমন মার মারলে বল একেবারে গির্জে টপকে চলে গেল। তারা নেচেছিল খোলা তলোয়ার ঘুরিয়ে কাবুল দেশের হাজারী নাচ। এই যেমন তোমাদের সাঁওতাল নাচ আর কি, সেইরকম ওটা ছিল কাবুলী নাচ।
আমাদের তো রিহার্সেল তৈরি, সময়ও হয়ে এসেছে। যত-সব সাহেবসুবো, লাটসাহেবের মেম আসবে। আমরা সাজব ডাকাত। মেজোজ্যাঠামশায় বললেন, ও হবে না, খালি গায়ে ডাকাত সাজা হবে না।
কী করা যায়। আমি বললুম, তা হলে ঐ হাজারীদের মতো সাজ করা যাক। সবাই খুশি, বললেন, এ ঠিক হবে। ডাকো দরজী। আগে ছিল ডাকাতদের খালি গা, বুকে সরু শালুর ফেটি। দরজী এসে আমাদের সাজ করতে লাগল, কাবুলীদের মতো গায়ে সেইরকম পাঞ্জাবি, পা অবধি কাবুলী পাজামা। আমাদের মহা উৎসাহ, ভাবছি এবারে আমরা ডাকাত সেজে দেখাব সবাইকে, ডাকাত কাকে বলে।
মহা সমারোহে স্টেজ সাজানো হল। নিতুদা নিলেন স্টেজ সাজাবার ভার। অনেক কারিকুরি করলেন তিনি স্টেজে। মাটি দিয়ে উঠোনের খানিকটা অর্ধচন্দ্রাকারে ভরাট করলেন। সেই থেকে সেই চাতালটা রয়ে গেছে। বটগাছ তো আগেই সাবাড় হয়েছিল, যা ছিল কিছু বাকি এনে পুঁতলেন, বনজঙ্গল বানালেন সেই মাটিতে। স্টেজে সত্যিকার বৃষ্টি ছাড়া হবে, দোতলার বারান্দা থেকে টিনের নল সোজা চলে গেজে স্টেজের ভিতরে। নানারকম দড়িদড়া বেঁধে গাছপালা উপরে ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে, সিন বুঝে সেগুলি নামিয়ে দেওয়া হবে।
১১৭