পাতা:ঘরোয়া.djvu/১৩৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

জানো না বুঝি? এক অদ্ভুত ব্যাপার হয়েছিল। রবিকাকা আমরা সবাই আছি। দেখি থেকে থেকে আমরা পার্ট্‌ ভুলে যাচ্ছি। ভয় হয় রবিকাকা কখন ধমকে টমকে বসবেন। রবিকাকাও দেখি মাঝে মাঝে আটকে যান। পার্ট আর মুখস্থ হয় না।

 রবিকাকাকে বললুম, বয়স হয়ে গেছে পার্ট্‌ মনে রাখতে পারি নে, প্রম্প্‌টার পাশ থেকে কী বলে শুনতেও পাই নে সব সময়। শেষে স্টেজে নেমে বিপদে পড়ব, প্রম্প্‌টারকে স্টেজে নামানো যায় না?

 রবিকাকা বললেন, সে কী কথা! আমি বললুম, দেখোই-না, বেশ মজাই হবে।

 প্রম্প্‌টারদের বললুম, মশায়, স্টেজে আমাদের সঙ্গে সঙ্গে ঘুরতে হবে। তারাও বললে, সে কী মশায়! আমি বললুম, আমি সব ঠিক করে সাজিয়ে গুজিয়ে দেব, ঠিক মানিয়ে যাবে। ভয় নেই কিছু। নয়তো শেষে পার্ট্‌ ভুলে রবিকাকার তাড়া খেয়ে এই বয়সে একটা সিন করি আর কী। তা হবে না, তোমাদেরও নামতে হবে।

 দুইজন প্রম্প্‌টার নামবে। তাদের করলুম কী, বেশ নীলচিটে কালচিটে পাতলা কাপড়ের বোরখার মতো গেলাপ পরিয়ে মাথা থেকে পা পর্যন্ত দিলুম ঢেকে। চোখের আর মুখের জায়গাটা একটু ফাঁক রাখলুম অবিশ্যি। হাতে দিলুম বড়ো একটা বাঁশের ডাণ্ডা। সোনালি রুপোলি কাগজ দিয়ে চক্কোর মতো লাগিয়ে দিলুম সেই ডাণ্ডাতে। যেমন মিউজিক স্ট্যাণ্ড হয় সেইরকম—যেন জীবন্ত মিউজিক স্ট্যাণ্ড বাইরে থেকে দেখতে হল। ভিতর দিকে রইল বইয়ের পাতা সুতো দিয়ে আটকানো।

 এখন, এই ডাণ্ডা হাতে নিয়ে দুইজন প্রম্প্‌টার দু-পাশ থেকে স্টেজের অ্যাক্‌টারদের পিছনে ঘুরে ঘুরে প্রম্প্‌ট করে দিতে লাগল। আমাদের বড়ো সুবিধা হয়ে গেল, আর ভুল নেই, অভিনয় চলল।

 বেশ হয়েছিল তাদের দেখতে, অনেকটা ব্যাকগ্রাউণ্ডের সঙ্গে মিশে গিয়েছিল, অল্প অল্প দেখাও যাচ্ছে পাতলা কাপড়ের ভিতর দিয়ে, কালো

১৩১