পাতা:ঘরোয়া.djvu/১৩৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

দৈত্যদানবের মতো পিছনে ঘোরাঘুরি করছে আর স্টেজও বেশ মানিয়ে গিয়েছিল। কী একটা অভিনয় ছিল ঠিক মনে পড়ছে না। রথী বা নন্দলালকে জিজ্ঞেস কোরো, বলে দিতে পারবে।

 এখন, অভিনয় তো হল, আমাদের আর কোনো অসুবিধা নেই, থেকে থেকে কখনো আমরা প্রম্প্‌টারের কাছে যাচ্ছি, তারাও থেকে থেকে আমাদের পিছনে এসে পার্ট্‌ বলে দিয়ে যাচ্ছে। রবিকাকাও দেখি মাঝে মাঝে ঘাড় কাত করে মাথা হেলিয়ে শুনে নিচ্ছেন আর অভিনয় করছেন। অভিনয়ের পরে জানাশোনার মধ্যে যাঁরা অভিনয় দেখেছিলেন তাঁদের জিজ্ঞেস করলুম, কেমন লাগল।

 তারা বললে, অতি চমৎকার, আর ও-দুটো কালো কালো দৈত্যদানবের মতো পিছনে পিছনে ঘুরছিল, ও কী মশায়।

 আমি বললুম, প্রম্প্‌টার। কিছু শুনতে পেয়েছিলেন কি।

 তাঁরা বললেন, কিছু না কিছু না, অতি রহস্যজনক ব্যাপার দুটো মূর্তি, আমরা আরো ভাবছিলাম পিছনে দৈত্য দানব আর সামনে আপনারা ইত্যাদি ইত্যাদি।

 তাঁরা অনেক অনেক কিছু ভেবে নিয়েছিলেন। বেড়ে হয়েছিল সেবারে ঐ প্রম্প্‌টারদের ব্যাপার। প্রম্প্‌টাররা বললে, বেড়ে তো হল আপনাদের, আর আমরা থলের ভিতর ঘেমে ঘেমে সারা।

 ‘ফাল্গুনী’ জোড়াসাঁকোর বাড়িতেই হয়, তাতে আমি, দাদারা সবাই পার্ট্‌ নিয়েছিলুম। শান্তিনিকেতনের ছোটো ছোটো ছেলেরাও ছিল। স্টেজ সাজিয়েছিলুম দোলাটোলা বেঁধে। বাঁকুড়া দুর্ভিক্ষের জন্য টাকা তুলতে হবে, যত কম খরচ হয় তারই চেষ্টা। ব্যাকগ্রাউণ্ডে দেওয়া হল সেই বাল্মীকিপ্রতিভার নীল রঙের মখমলের বনাত, দেখতে হল যেন গাঢ় নীল রঙের রাতের আকাশ পিছনে দেখা যাচ্ছে। বটগাছ তো আগেই সাবাড় হয়ে গিয়েছিল, বাদামগাছের ডালপালা এনে কিছু কিছু এখানে-ওখানে দিয়ে স্টেজ সাজানো হল। সেই বাদামগাছও এই এবারে কাটা পড়ল। বাঁশের গায়ে দড়ি ঝুলিয়ে দোলা টানিয়ে দিলুম।

১৩২