দিকে, সঙ্গে ছিল দিনু, সুরেন, আরো সব ডাকাবুকো লোক।
এ দিকে দীপুদাকে বাড়িতে এসে এই খবর দিলুম, বললুম, কী একটা কাণ্ড দেখো। দীপুদা বললেন, এই রে, দিনুও গেছে, দারোয়ান দারোয়ান, যা শিগগির, দেখ্ কী হল— বলে মহা চেঁচামেচি লাগিয়ে দিলেন। আমরা সব বসে ভাবছি—এক ঘণ্টা কি দেড় ঘণ্টা বাদে রবিকাকারা সবাই ফিরে এলেন। আমরা সুরেনকে দৌড়ে গিয়ে জিজ্ঞেস করলুম, কী, কী হল সব তোমাদের। সুরেন যেমন কেটে কেটে কথা বলে, বললে, কী আর হবে, গেলুম মসজিদের ভিতরে, মৌলবী-টৌলবী যাদের পেলুম হাতে রাখী পরিয়ে দিলুম। আমি বললুম, আর মারামারি! সুরেন বললে, মারামারি কেন হবে—ওরা একটু হাসলে মাত্র। যাক্, বাঁচা গেল। এখন হলে—এখন যাও তো দেখি, মসজিদের ভিতরে গিয়ে রাখী পরাও তো—একটা মাথা-ফাটাফাটি কাণ্ড হয়ে যাবে।
তখন পুলিসের নজর যে কিছুই নেই আমাদের উপরে, তা নয়। একবার আমাদের উপরের দোতলার হলে একটা মিটিং হচ্ছে, রাখীবন্ধনের আগের দিন রাত্তিরে, উৎসবের কী করা হবে তার আলোচনা চলছিল। সেদিন ছিল বাড়িতে অরন্ধন, শাস্ত্র থেকে সব নেওয়া হয়েছিল তো! মেয়েরা সেবারে দেশ-বিদেশ থেকে ফোঁটা রাখী পাঠিয়েছিল রবিকাকাকে। হ্যাঁ, মিটিং তো হচ্ছে—তাতে ছিলেন এক ডেপুটিবাবু। আমাদের সে-সব মিটিঙে কারো আসবার বাধা ছিল না। খুব জোর মিটিং চলছে, এমন সময়ে দারোয়ান খবর দিলে, পুলিস সাহেব উপর আনে মাঙ্তা।
সব চুপ, কারো মুখে কোনো কথা নেই। রবিকাকা দারোয়ানকে বললেন, যাও, পুলিস সাহেবকে নিয়ে এসো উপরে।
ডেপুটিবাবুর অভোস ছিল, সব সময়ে তিনি হাতের আঙুলগুলি নাড়তেন আর এক দুই তিন করে জপতেন। তাঁর কর-জপা বেড়ে গেল পুলিস সাহেবের নাম শুনে। তাড়াতাড়ি উঠে পড়ে বললেন, আমার এখানে তো আর থাকা চলবে না। পালাবার চেষ্টা করতে লাগলেন, বেড়ালের নাম শুনে যেমন ইঁদুর পালাই-পালাই করে।