এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

দামী শাল ও পাঁচশো টাকা পুরস্কার পেলেন। নাটকের নাম হল ‘নব-নাটক’।

 দাদামশায় করেছিলেন ‘নববাবুবিলাস’, তাঁর ছেলে করলেন নব-নাটক। এই দোতলার হলে থিয়েটার হয়। স্টেজকপিখানা যে কোথায় আছে জানি নে, তার মধ্যে কে কী পার্ট নিয়েছিলেন সব লেখা ছিল। তবু যতটা মনে পড়ে বলছি। নট সেজেছিলেন ছোটোপিসেমশায়, নীলকমল মুখোপাধ্যায়। নটী জ্যোতিকাকামশায়। তখনকার থিয়েটারে নট-নটী ছাড়া চলত না। কৌতুক—মতিলাল চক্রবর্তী, ছোটোপিসেমশায়ের আপিসের লোক ছিলেন তিনি। গবেশবাবু, নাটকের নায়ক, যিনি তিন-চারটে বিয়ে করেছিলেন, অক্ষয় মজুমদার নিয়েছিলেন সেই পার্ট। গবেশবাবুর তিন স্ত্রীর পার্ট নিয়েছিলেন যথাক্রমে মণিলাল মুখুজ্জে, ছোটোপিসেমশায়ের ছোটো ভাই, আমাদের মণি খুড়ো—বিনোদ গাঙ্গুলি—তাঁরা তখন ছোকরা—আর বড়ো স্ত্রী সেজেছিলেন ও-বাড়ির সারদা পিসেমশায়। হারমোনিয়াম বাজাতেন জ্যোতিকাকামশায়। তার আগে হারমোনিয়াম বাজিয়ে গান হয় নি, এই প্রথম হল। নয় রাত্তির ধরে সমানে থিয়েটার হয়েছিল। সাহেবসুবো, শহরের বড়ো বড়ো লোক সবাই এসেছিলেন। বাড়ির মেয়েদের তখন বাইরে বের হবার নিয়ম ছিল না। তখনকার দিনে দস্তুরই ছিল ঐ। মার কাছে শুনেছি বাবামশায়রা যখন বাগানে বসতেন, কাছাকাছি জানালায় গিয়ে উঁকি দেওয়া বা দাসদাসীর ঝুঁকে পড়ে কিছু দেখা, এ-সব ছিল অসভ্যতা। বাইরের পুরুষ বাড়ির মেয়েদের দেখবে এ বড়ো নিন্দের কথা। তা, থিয়েটার হবে হলে, পাশের ঘরে ঘুলঘুলি দিয়ে বাড়ির মেয়ের থিয়েটার দেখতেন। দুটি ঘুলঘুলি মাত্র ছিল সেখানে, তার একটিতে খাটাল জুড়ে বসতেন কর্তাদিদিমা আর-একটি ঘুলঘুলি দিয়ে বাড়ির অন্য মেয়েরা ভাগাভাগি করে দেখতেন। নয় রাত্তির সমানে কর্তাদিদিমা থিয়েটার দেখেছেন। মা বলতেন, মাকে আবার কর্তাদিদিমা একটু বেশি ভালোবাসতেন, মা যশোরের মেয়ে ছিলেন; তার উপরে

৮৮