দিনগুলাও চব্বিশ ঘণ্টার এক মিনিট বেশি নয়। বিধাতার হাতে কাল অনন্ত, তবু এমনতরো বিশ্রীরকমের কৃপণতা কেন, আমি তো বুঝিতে পারি না।
দামিনী বলিল, “তুমি যে এই পাগলামি করিতে বসিলে— তোমার ঘরের লোক—”
আমি বলিলাম, “তারা আমার সুহৃদ। এবার তারা আমাকে ঘর থেকে দূর করিয়া তাড়াইয়া দিবে।”
“তার পর?”
“তার পরে তোমায় আমায় মিলিয়া একেবারে বুনিয়াদ হইতে আগাগোড়া নূতন করিয়া ঘর বানাইব— সে কেবল আমাদের দুজনের সৃষ্টি।”
দামিনী কহিল, “আর, সেই ঘরের গৃহিণীকে একেবারে গোড়া হইতে বানাইয়া লইতে হইবে। সেও তোমারই হাতের সৃষ্টি হোক, পুরানো কালের ভাঙাচোরা তার কোথাও কিছু না থাক্।”
চৈত্রমাসে দিন ফেলিয়া একটা বিবাহের বন্দোবস্ত করা গেল।
দামিনী আবদার করিল, শচীশকে আনাইতে হইবে।
আমি বলিলাম, “কেন।”
“তিনি সম্প্রদান করিবেন।”
সে পাগলা যে কোথায় ফিরিতেছে তার সন্ধান নাই। চিঠির পর চিঠি লিখি, জবাবই পাই না। নিশ্চয়ই এখনো সেই ভুতুড়ে বাড়িতেই আছে, নহিলে চিঠি ফেরত আসিত। কিন্তু সে কারো চিঠি খুলিয়া পড়ে কি না সন্দেহ।