পাতা:চতুষ্কোণ - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/১৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

চতুষ্কোণ --দ্যাখো না ছাড়াবার চেষ্টা করে ? সরল সহজ আহবান, একান্ত নিবিকার । পঞ্চাশ বছরের একজন স্ত্রীলোক যেন তার কঁচা পাকা চুলে ভরা মাথা হইতে দুটি পাকা চুল তুলিয়া দিতে বলিতেছে দশ বার বছরের এক বালককে। গিরীন্দ্ৰনন্দিনীর বাড়ি ঘুরিয়া আসিবার আগে হইলে হয়তো রাজকুমার কিছুমাত্র সঙ্কোচ বা অস্বস্তি বোধ করিত না, এখন মনোরমার প্রস্তাবে সে যেন নিজের মধ্যে কুঁচকাইয়া গেল। মনোরমা একটু অসন্তুষ্ট হইয়া বলিল, খোকাকে ছোয়ার নামেই ভড়কে গেলো! ছোট ছেলেপিলেকে ছুতেই তোমার এত ঘেন্না কেন दल cऊ ब्रांजू उांशे ? রাজকুমার বিব্রত হইয়া বলিল, না না, ঘেন্না কে বললে, ঘেন্না কিসের ! তারপর অবশ্য মনোরমার স্তন হইতে খোকার হাত দু'টি ছাড়াইয়া দিবার চেষ্টা তাকে করিতে হইল। মনোরম স্নেহের আবেশে মুগ্ধ চোখ মেলিয়া দেখিতে লাগিল তার আধা ঘুমন্ত খোকার নির্বিকার প্ৰশান্ত মুখে কান্না-ভরা প্ৰচণ্ড প্ৰতিবাদের দ্রুত আয়োজন আর জগতের অষ্টমাশ্চর্য দেখিবার মত বিস্ময়ভরা চোখ মেলিয়া রাজকুমার দেখিতে লাগিল মনোরমার মুখ । খোকার কচি হাত আর মনোরমার কোমল স্তনের স্পর্শ যেন অবিস্মরণীয় সুগন্ধি অনুভূতিতে ভরা তেজস্কর রসায়নের মত তার মধ্যে নবজীবনের সঞ্চার করিতে লাগিল । তার আহত মনের সমস্ত গ্লানি মুছিয়া গেল। খোকার হাত বেশীক্ষণ ধরিয়া রাখা গেল না, তীক্ষা গলার প্রচণ্ড আৰ্ত্তনাদে কানে তাল ধরাইয়া সে তখন প্ৰাণপণে হাত পা ছুড়িবার জন্য ছটফট করিতেছে । মনোরমা বলিল, দেখলে ? রাজকুমার মেঝেতে বসিয়া বলিল, হু, ছোড়ার সত্যি তেজ আছে! মনোরমার হাসিভরা মুখখানা মুহুর্তে অন্ধকার হইয়া গেল। ভুরু