পাতা:চতুষ্কোণ - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/২৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

3 । ध्डूकांश সঙ্গে ছোটলোকের মত ব্যবহার করিয়াছে। কি আসিয়া যাইত রিনিকে চুম্বন করিলে ? চায়ের কাপে চুমুক দেওয়ার চেয়ে এমন কি গুরুতর ব্যাপার নরনারীর আলগা চুম্বন ? একটু গ্ৰীতি বিনিময় করা, একটু আনন্দ জাগানো, মৈত্রীর যোগাযোগকে কয়েক মুহুর্তের জন্য স্পষ্টতরভাবে অনুভব করা। রিনি। তাই চাহিয়াছিল। কিন্তু নিজে সে গিরীন্দ্ৰনন্দিনীর পর্যায়ের মানুষ কিনা, চুম্বনের জের চরম মিলন পর্যন্ত টানিয়া না চলাটাও যে যুবক-যুবতীর পক্ষে সম্ভব এ ধারণাও তার নাই কিনা, তাই সে ভাবিতেও পারে নাই রিনির আহবানে সাড়া দিলেও তাদের সহজ বন্ধুত্বের সম্পর্কটা বজায় থাকিবে, অসঙ্গত ঘনিষ্ঠতায় পরিণত হইয়া যাইবে না । t চুম্বন অবশ্য নরনারীর মিলনেরই অঙ্গ, সুপবিত্র কোন আধ্যাত্মিক মিথ্যার ধোঁয়া সৃষ্টি করিয়া রিনির সঙ্গে তার চুম্বন বিনিময়কে সে ব্যাখ্যা করিতে চায় না। কেন সে ভাবিতে পারে নাই চুম্বনের ভূমিকাতেই সমাপ্তি ঘটানোর মত সংযম তাদের আছে ? চোখ মেলিয়া রিনির রূপ সে দেখিয়া থাকে, কাছাকাছি বসিয়া হাসিগল্পের আনন্দ উপভোগ করে, মাঝে মাঝে স্পর্শ বিনিময়ও ঘটিয়া যায়। কিন্তু আত্মহারা হইয়া পড়ার প্রশ্নও তো তাদের মনে জাগে না । সে কি কেবল এইজন্য যে ওই পর্যন্ত ঘনিষ্ঠতা দশজনে অনুমোদন করে ? চুম্বন বিনিময়ের অনুমতি দেওয়া থাকিলে তো আজ তার মনে হইত না রিনিকে চুম্বন করা বিবেকের গায়ে পিন ফুটানো এবং একবার পিন ফুটাইলে একেবারে ছোরা বসাইয়া বিবেককে জখম না করিয়া নিস্তার থাকিবে না ! কেবল সে এক নয়, সকলেই এই রকম। অনেক পরিবারে পনরো বছরের মেয়েরও বাপ ভাই ছাড়া কোন পুরুষের সামনে যাওয়া বারণ। এমন একটি মেয়ে যদি কেবল চুপি চুপি দুটি কথা বলার জন্যও পাশের বাড়ির ছেলেটাকে ডাকে, ছেলেটা কি ভাবিবে ? রিনি চুম্বন চাওয়ার খানিক আগে সে যা ভাবিয়াছিল। এমন একটা বিকৃত আবেষ্টনীর মধ্যে তারা মানুষ হইয়াছে যে