পাতা:চতুষ্কোণ - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৬৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

छछूकाव VR -শুধু ঘরে বসে থাকবে ? দু’চারজনের সঙ্গে একটু ভাবসাব করে আসুক ? মনোরমার মুখ হাসিতে ভরিয়া গেল। --বেশ তো নিয়ে যাও, আমায় আবার জিজ্ঞেস করা কেন ? কালীর অঙ্গপ্ৰত্যঙ্গের বৈশিষ্ট্য মনের মধ্যে বহিয়া নিয়া গিয়া রিনি, সরসী, মালতী আর অন্য মেয়েদের সঙ্গে মিলাইয়া দেখিতে রাজকুমারের বড় অসুবিধা হইতেছিল। ওরকম আন্দাজী গবেষণায় এত বড় একটা তথ্য কি যাচাই করা চলে ? পাশাপাশি দাড় করাইয়া কালীর সঙ্গে অন্য মেয়ের দেহের গড়নের তুলনা না করিলে অনুমানকে প্ৰমাণ বলিয়া গ্ৰহণ করা উচিত হইবে না । কালীকে সঙ্গে করিয়া সে দু’বেল বাহির হয়, এক এক জনের বাড়ি গিয়া কালীর সঙ্গে পরিচয় করিয়া দেয়। সকলে তারা ভাবে এ আবার কি খেয়াল রাজকুমারের ? মনোরমা খুব খুশী হয়। এতদিন তার শুধু আশা ছিল, এবার তার ভরসা জাগে যে আশা হয়তো তার মিটবে। ধীরে ধীরে রাজকুমারের কাছে তার অস্পষ্ট অনির্দিষ্ট অনুমান স্পষ্ট প্রমাণিত সত্য হইয়া উঠিতে থাকে । দ্বিধা সন্দেহ মিলাইয়া যায়। মাঝে মাঝে তার মনে হইতেছিল, মাথাটা বুঝি তার খারাপ হইয়া গিয়াছে, পাগলের মত সে অনুসরণ করিতেছে নিজের বিকৃত চিন্তার। এই আত্মাগ্লানির বদলে এখন সে অনুভব করিতে থাকে আবিষ্কারকের গর্ব । কালীকে দেখিয়া তার মনে হইয়াছিল, তার দেহের গড়ন ঘরোয়া, অন্তঃপুরের একটি বিশেষ আবেষ্টনীতে একটি বিশেষ জীবনের সে উপযোগী । এখন সে জানিতে পারিয়াছে কেবল কালী এক নয়, সকলের দেহের গড়নেই এই সঙ্কেত আছে, দেহ দেখিয়া বুঝিতে পারা যায় সমাজের নানা স্তরে জীবনের বহু ও বিচিত্র পরিবেশের কোনটিতে সে খাপ খাইবে ।