চন্দ্রনাথ 338 দামের ভাঙ্গা বাণী। ছেলেমানুষের মত বৃদ্ধ কৈলাসচন্দ্র সেগুলি কুড়াইয়া আনিয়া আপনার শোবার ঘরে রাখিয়া দিলেন। দুপুর-বেলায় আবার গঙ্গা পাড়ের বাড়িতে দাবা পাতিয়া । বসিতে লাগিলেন। সন্ধ্যার পর মুকুন্দ ঘোষের বৈঠকখানায় আবার লোক জমিতে লাগিল, কিন্তু প্রসিদ্ধ খেলোয়াড় বলিয়া কৈলাসচক্সের আর তেমন সম্মান নাই ; তখন দিগ্বিজয়ী ছিলেন, এখন থেলামাত্র সার হইয়াছে। সেদিন যাহাকে হাতে ধরিয়া খেলা শিখাইয়াছিলেন, আজ সে চাল বলিয়া দেয়। যাহার সহিত তিনি দাবী রাখিয়াও খেলিতে পারিতেন,সে আজ নাখা উচু করিয়া স্বেচ্ছায় একখানা নৌকা মার দিয়া খেলা আরম্ভ করে। পূর্বের মত এখনও খেলিবার ঝেণক আছে কিন্তু সামর্থ্য নাই। দুই-একটা শক্ত চাল এখনও মনে পড়ে, কিন্তু সোজা খেলার বড় . ভূল হইয়া যায় ! দাবা খেলায় তাহার গৰ্ব্ব ছিল, আজ তাহ শুধু লজ্জায় পরিণত হইয়াছে। তবে শম্ভু মিশির এখনও সম্মান করে ; সে আর প্রতিদ্বন্দ্বী হইয়া খেলে না, প্রয়োজন হইলে দুই-একটা কঠিন সমস্ত পূর্ণ করিয়া লইয়া যায়। বাড়িতে আজ কাল তাহার বড় গোলযোগ বাধিতেছে। লর্থীরার মা দস্তুরমত রাগ করিতেছে ; দুই-এক দিন তাঁহাকে চোখের জল মুছিতেও দেখা গিয়াছে। সে বলে,বাবু, নাওয়া খাওয়া একেবারে কি ছেড়ে দিলে ? আয়ন দিয়ে চেহারাটা একবার দেখ গে। কৈলাসচন্দ্ৰ মৃদ্ধ হাসিয়া কছেন,বেট রাধাবাড়া সব ভুলে গেছি —জার আগুন তাতে যেতে পারি নে। -
পাতা:চন্দ্রনাথ-শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.djvu/১২৩
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।