পঞ্চান্ন বছর পরে আবার দেখা হল, চিনব কি করে? তোমার এক মাথা কালো চুল ছিল, সাদা হয়ে গেছে। ছিপছিপে গড়ন ছিল, এখন মোটা হয়ে পড়েছ। মুখের চামড়া ঢিলে হয়ে গেছে, গাল কুঁচকে গেছে। তুমি অতি সুন্দরী তন্বী কিশোরী ছিলে, হাসলে গালে টোল পড়ত, দাঁত ঝিকমিক করে উঠত। যশোমতী ম্লান মুখে হাসলেন।
—ওই ওই! এখনও গালে টোল পড়েছে, দাঁত ঝিকমিক করেছে।
—বাঁধানো দাঁত।
—তা হক, আগের মতনই সুন্দর ঝিকমিকে। আমাদের শারীর শাস্ত্রে বলে, দাঁত নখ চুল আর শিঙ জীবন্ত অঙ্গ নয়, এদের সাড় নেই। আসল আর নকলে প্রায় সমানই কাজ চলে।
— সব কাজ চলে না। ছোলা ভাজা চিবুতে পারি না।
—ভাল ডেণ্টিস্টকে দিয়ে বাঁধালে পারবে। যশো, তুমি এখনও কোকিলকণ্ঠী, তবে গলার স্বর একটু মোটা হয়েছে। আমাকে দেখেই চিনতে পেরেছ?
—তা না পারব কেন। তোমার চুল পেকেছে, টাক পড়েছে, কিন্তু মুখের ছাঁদ বদলায় নি, গালও বেশী তোবড়ায় নি, গলার স্বরও আগের মতন আছে।
—দেরাদুনে কবে এলে? আমার সন্ধান পেলে কি করে?
—পরশু এখানে পৌঁছেছি। আমার নাতি ডেপুটি ট্রাফিক ম্যানেজার হয়ে এসেছে, তার কাছেই আছি। আজ সকালে এই হোটেলে দূর সম্পর্কের এক বোনপোর সঙ্গে দেখা করতে এসেছিলাম। অতিথিদের লিস্টে তোমার নাম দেখলাম।
—নাতিকে নিয়ে এলে না কেন?
—আজ এত কাল পরে তোমার সন্ধান পেলাম, তাই একাই দেখা