পাতা:চমৎকুমারী ইত্যাদি গল্প - পরশুরাম.pdf/১৩৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
গুপী সাহেব
১২৯

 দাশু মল্লিক ধূমপান করতে করতে চুপিচুপি বললেন, দেখ হে, তুমি এই দেনাপাওনার ব্যাপারে বেশী জড়িয়ে প’ড়ো না, পরে হয়তো লজ্জায় পড়বে। আমার ভাগনে, মানে নয়নচাঁদের ছেলে একটি পাঁঠা।

 এমন সময় নয়নচাঁদ এলেন, এসেই একটা তাকিয়া টেনে নিয়ে শুয়ে পড়লেন।

 আমি প্রশ্ন করলুম, কি হল পাইন মশাই, শরীরটা খারাপ নাকি?

 নয়নচাঁদ আঙুল নেড়ে গম্ভীর কণ্ঠে বললেন, আমি তোমাদের এই বলে রাখলুম, দেশ উচ্ছন্নে যেতে বসেছে, সর্বনাশের আর দেরি নেই।

 দাশু মল্লিক আর আমি জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে চেয়ে রইলুম। নয়নচাঁদ বলতে লাগলেন, গেল হপ্তায় মানিকতলা বাজারে পকেট থেকে সাড়ে চোদ্দ টাকা উধাও হল। আবার আজ সকালে কলেজস্ট্রীট মার্কেটে ঊনিশ টাকা তেত্রিশ নয়াপয়সা মেরে নিয়েছে। তোমাদের মিনমিনে গণতন্ত্রী সরকারকে দিয়ে কিছুই হবে না, জবরদস্ত আয়ুবশাহী গভরমেণ্ট দরকার, পকেটমার চোর আর ভেজালওয়ালাদের সরাসরি ফাঁসিতে লটকাতে হবে।

 দাশু মল্লিক বললেন, যা বলেছ দাদা। তোমাদের মনে আছে কিনা জানি না, তেরো-চোদ্দ বছর আগে লীগ মন্ত্রীদের আমলে পুরো একটি বছর পিকপকেটিং একবারে বন্ধ ছিল, নট এ সিংগল কেস। তার পর যেমন স্বাধীনতা এল, আবার যে কে সেই।

 আমি বললুম, আপনারা প্রকৃত খবর জানেন না। লীগ মন্ত্রীদের বা পুলিসের কিছুমাত্র কেরামতি ছিল না, পকেটমারদের ঠাণ্ডা করেছিল আমাদের গুপী সায়েব।

 নয়নচাঁদ বললেন, তিনি আবার কে?