পাতা:চমৎকুমারী ইত্যাদি গল্প - পরশুরাম.pdf/১৪২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
গুপী সাহেব
১৩৩

হয়ে তক্তপোশ থেকে নেমে গেলুম। কাঁকড়াবিছের দল গুপীর হাত থেকে কাগজের ওপর পড়ল আর টপ টপ করে সমস্ত পিঁপড়ের ডিম খেয়ে ফেলল। তার পর গুপী সায়েব তার পোষা জানোয়ারদের আবার পকেটে পুরল।

 আমরা সবাই বললুম, তোমার এ কিরকম ভয়ংকর শখ? কোন্ দিন বিছের কামড়ে মারা যাবে দেখছি।

 গুপী সায়েব বলল, আপনারা জানেন না, কাঁকড়াবিছে অতি উপকারী প্রাণী। বিছানায় ছারপোকা হয়েছে? কীটিংস পাউডারে কিছু হচ্ছে না? (তখন ডিডিটি ইত্যাদি বেরোয় নি)। গুটিকতক কাঁকড়াবিছে ছেড়ে দিন, তিন-চার দিন অন্য ঘরে রাত্রিযাপন করুন, তার পর দেখবেন ছারপোকা নির্বংশ, আণ্ডা বাচ্চা ধাড়ী সমস্ত সাবাড়। আলমারি কি দরজা-জানালায় উই লেগেছে? ভাঁড়ার ঘরে পিঁপড়ে? তারও দাবাই কাঁকড়াবিছে।

 জিতেন বোসের নাম শুনে থাকবেন। ভদ্রলোকের পুরনো বই সংগ্রহের বাতিক আছে। একদিন এখানে আড্ডা দিতে এসেছেন। কথায় কথায় বললেন, আর তো পারা যায় না, কলকাতার যত রিসার্চ স্কলার আর পি-এচ. ডি. আছেন সবাই আমার ওপর হামলা করছেন। কেবলই বলেন, এই বইটা দু দিনের জন্যে দাও, ওইখানা সাত দিনের জন্যে দাও। বই দিলে কিন্তু ফেরত আসে না। ওমর খাইয়ামের স্বহস্তে লেখা একটি মহামূল্য পুঁথি আমার আছে। ডকটর সীতারাম নশকর সেই পুঁথিটি বাগাতে চান, একজন জর্মন প্রোফেসরকে দেখাবেন। নশকর মশাইকে হাঁকিয়ে দিতে পারি না, এককালে তাঁর কাছে পড়েছিলুম। তানানানা করে এতদিন কাটিয়েছি, কিন্তু আসছে রবিবারে তিনি আবার আসবেন, কি ছুতো করব তাই ভাবছি।

 দৈবক্রমে গ্রুপী সায়েব উপস্থিত ছিল। সে বলল, আপনি