গোলোক। ছি ছি করবার কি আছে, বিয়ে করেছে তো হয়েছে কি?
জয়গোপাল। শাস্ত্রে আছে, পুত্রার্থে ক্রিয়তে ভার্যা। আরে তোর দুটো ছেলে না হয় গেছে, কিন্তু একটা তো বেঁচে আছে, মেয়েও একটা আছে, তবে কোন হিসেবে অবার বিয়ে করলি? তোর বয়স হয়েছে, দেবার্চনা ধ্যান-ধারণা পরমার্থচিন্তা এই সব করেই তো শান্তিতে জীবন কাটিয়ে দিতে পারতিস। বুড়ো বয়সে একি মতিচ্ছন্ন হল!
গোলোক। ওহে জয়গোপাল, তুমি নিজের কথার খেলাপ করছ। তোমার শ্রীভগবান যে মঙ্গলময় তা তো দেখতেই পেলে। শেষ পর্যন্ত দীনেশের ভালই করলেন, তরুণী ভার্যা দিলেন, আবার দশ হাজার টাকাও দিলেন। আর, তোতলা স্ত্রী পাওয়া তো মহা ভাগ্যের কথা, চোপা শুনতে হবে না, দাম্পত্য কলহেরও ভয় নেই। তবে তোমার খেদ কিসের?
জীবন। তোমাদের শ্রীভগবান কিন্তু হরগোবিন্দ সাহার সঙ্গে মোটেই ভাল ব্যবহার করেন নি। রেলের কলিশনে তার স্ত্রী ছেলেমেয়ে সব মারা গেল, হরগোবিন্দর দুটো পা কাটা গেল। লোকটি অতি সজ্জন, বিস্তর টাকা, কিন্তু বেচারা অনেক চেষ্টা করেও আর একটা বউ যোগাড় করতে পারে নি, একটা বোবা কালা কানা খোঁড়াও জোটে নি।
গোলোক। হরগোবিন্দকে চিনি না, তার জন্যে ভাববার দরকার নেই। আমাদের দীনেশ কিন্তু ভাগ্যবান। দিব্যচক্ষে দেখতে পাচ্ছি— সে গোঁফ কামিয়ে তরুণ হয়েছে, চুলে কলপ লাগিয়েছে, জরি পাড় ধুতি আর সোনালী গরদের পঞ্জাবি পরেছে, জগদানন্দ মোদক খাচ্ছে, তার ঠোঁটে একটা বোকা বোকা হাসি ফুটেছে।