পাতা:চয়নিকা-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৪৯৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৪৮০
চয়নিকা

ঈশান কোণে উড়তি বালি আকাশখানা ছেয়ে
হু হু করে আসছে ছুটে ধেয়ে।
কাকগুলো তার আগে আগে উড়ছে প্রাণের ভরে,
হার মেনে শেষ আছাড় খেয়ে পড়ে মাটির পরে।
হাওয়ার বিষম ধাক্কা তাদের লাগছে ক্ষণে ক্ষণে,
উঠছে পড়ছে, পাখার ঝাপট দিতেছে প্রাণপণে।
বিজুলি ধায় দাঁত মেলে তার ডাকিনীটার মতো,
দিক্‌দিগন্ত চম্‌কে উঠে হঠাৎ মর্মাহত।

ঐ রে, মাঝি, খেপ্‌ল গাঙের জল,
লগি দিয়ে ঠেকা নৌকো, চরের কোলে চল্।
সেই যেখানে জলের আশা, চখাচথীর বাস,
হেথা হোথায় পলিমাটি দিয়েছে আশ্বাস
কাঁচা সবুজ নতুন ঘাসে ঘেরা।
তলের চরে বালুতে রোদ পোহায় কচ্ছপেরা।
হোথায় জেলে বাঁশ টাঙিয়ে শুকোতে দেয় জাল,
ডিঙির ছাতে বসে বসে শেলাই করে পাল।
রাত কাটাব ঐখানেতেই করব রাঁধাবাড়া,
এখনি আজ নেই তো যাবার তাড়া।
ভোর থাকতে কাক ডাকতেই নৌকো দেব ছাড়ি,
ইটেখোলার মেলায় দেব সকাল সকাল পাড়ি।

জ্যৈষ্ঠ, ১৩৪৪
—“ছড়ার ছবি