কোনও শ্রেষ্ঠজন সম্বন্ধে এরূপ কঠোর, তীব্র, কখনও কখনও বা গভীর বিদ্রুপাত্মক প্রবন্ধ প্রকাশিত হইত যে এগুলি পড়িয়া অপরিচিত লোকে কোনও প্রকারেই সম্পাদককে এক জন শ্রদ্ধাশীল লোক বলিয়া কল্পনা করিতে পারিত না। কিন্তু উপাধ্যায়কে যাঁরা ঘনিষ্ঠভাবে জানিতেন, তাঁরা তাঁহার কথাবার্ত্তায় কখনও প্রকৃত শ্রদ্ধাশীলতার অভাব দেখিয়াছেন কি না সন্দেহ। পল্লীর স্বাস্থ্যরক্ষার জন্য, পল্লীবাসীর কাহাকেও না কাহাকেও তার আবর্জ্জনরাশি পরিষ্কৃত করা অত্যাবশ্যক হয়। অত্যাবশ্যকীয় কর্ম্ম যে করিতে যাইবে, তার হাতে ও গায়ে কিছু না কিছু ময়লাও লাগিবেই লাগিবে। কিন্তু দশের হিতের জন্য এ কাজ করিতে প্রবৃত্ত হইয়াছে বলিয়া সে বাক্তি যে স্বভাবতঃই আবর্জ্জনা ভালবাসে, এমন কথা যেমন বলা সঙ্গত হয় না, সেইরূপ সময়বিশেষে সমাজের নৈতিক বা রাষ্ট্রীয় আবর্জ্জনা পরিষ্কার করা প্রয়োজন হইলে, সমাজের শ্রেষ্ঠজনকেও সর্ব্বসমক্ষে অপদস্থ করা আবশ্যক হইতে পারে। আর সে অবস্থায়, সে অপ্রীতিকর কর্ম্ম যদি কেহ করে, তাহাতে তাহাকে স্বল্পবিস্তর হীনতাও স্বীকার করিতেই হয়। কিন্তু তাই বলিয়া সে নির্ব্বিকার-চিত্ত দেশসেবককে হীনচরিত্রের লোক বলিয়া মনে করা কখনই সঙ্গত হয় না। উপাধ্যায় সম্বন্ধেও এই কথাই খাটে। “সন্ধ্যা” পত্রিকায় সমাজের কোনও কোনও শ্রেষ্ঠজনকে যখন তখন তীব্রভাবে আক্রমণ করা হইত বলিয়া, সম্পাদকের প্রকৃতিতে যে একটা স্বাভাবিকী শ্রদ্ধাশীলতা ছিল না, একেবারে সরাসরিভাবে এমন সিদ্ধাত্ত করা যায় না।
ফলতঃ উপাধ্যায় “সন্ধ্যা” পরিচালনা করিতে যাইয়া, আপনার অন্তরকে কতটা পরিমাণে যে নিপীড়িত করিতেন, বহুদিন কাছে থাকিয়া, এক সঙ্গে কাজকর্ম্ম করিয়া, তাহা প্রত্যক্ষ করিয়াছি। এ সকল আক্রমণ যে সর্ব্বদা তিনি নিজে লিপিবদ্ধ করিতেন, তাহাও নহে। তবে