সেই কথা। যেটাকে ভাঙ্গিয়া যেটাকে গড়িতে যাইতেছি, তাহা কি বেশি ভাল? যেমন প্রচলিত জাতিভেদ, সেইরূপ বর্ত্তমানে যে আকারে বাল্যবিবাহ-প্রথা দেশে প্রবর্ত্তিত আছে, তাহাও সমাজের উন্নতি ও কল্যাণের ঠিক সহায় যে নয়, এ কথা উপাধ্যায় জানিতেন এবং মানিতেন। এ কুপ্রথা এক সময়ে আমাদের সমাজেও ছিল না। কোন্ যুগে, কি কারণে, কোন্ বিশেষ অবস্থাধীনে ইহা প্রচলিত হয়, স্থির করা বহু-বিস্তৃত ও সূক্ষ্ম গবেষণা-সাপেক্ষ। কিন্তু যখন এবং যে কারণেই ইহা প্রথমে প্রবর্ত্তিত হউক না কেন, হিন্দুসমাজে যখন প্রাণশক্তি প্রবল ছিল, তখন সমাজ আপনা হইতেই ইহার আনুসঙ্গিক অমঙ্গল ফলগুলি, একান্ত ভাবে না হউক, অন্ততঃ বহুল পরিমাণে নিবারণ কবিবাব উপায় উদ্ভাবন করিয়া লইয়াছিল। সমাজের সে প্রাণশক্তির হীনতা নিবন্ধন ক্রমে এ সকলও ব্যর্থ বা নষ্ট হইরা গিয়াছে। সুতরাং আজ বাল্যবিবাহ-প্রধা যতটা অনিষ্টকর হইয়া উঠিয়াছে, কিছুকাল পূর্ব্বেও তত অনিষ্টকর ছিল না। এ সকলই সত্য। সকলে না হউক, অতি নিষ্ঠাবান অথচ চিন্তাশীল হিন্দু যাঁহারা, তাঁহারাও এ সকল স্বীকার করেন। কিন্তু এই প্রথাকে জোর করিয়া বন্ধ করিলে, আর তাহার বদলে বিলাতী ছাঁচের যৌবন-বিবাহ ও যূননির্বাচন-প্রথা প্রবর্ত্তিত হইলে, আমরা কোথায় গিয়া দাঁড়াইব, তাহাতে আমাদের সমাজের বেশি অমঙ্গল আশঙ্কা হইবে কি না, এ সকল ভাবিয়া চিন্তিয়া, তাঁহারা সহসা এ সংস্কার কার্য্যে হস্তক্ষেপ করিতে সাহসী হন না।
এইরূপে আমাদের সমাজবিধানে যে সকল মন্দ জাগিয়া উঠিয়াছে, তাহাকে জোর করিয়া উপড়াইয়া দিলে, তার ভাল যাহা আছে, তাহাও নষ্ট হইয়া যাইবে কি না, এই ভয়েই উপাধ্যায় মহাশয় সমাজ-সংস্কার বিষয়ে এতটা শঙ্কিত হইয়া চলিতেন। নতুবা আমাদের সমাজে বর্ত্তমান