পণ্ডিত শিবনাথ শাস্ত্রী
ও
ব্রাহ্মসমাজ
আধুনিক ভারতবর্ষের শিক্ষা ও সাধনা ব্রাহ্মসমাজের নিকটে অশেষপ্রকারে ঋণী। আমরা এ ঋণ অস্বীকার করিলেও, ইতিহাস কখনও তাহা ভুলিয়া থাকিবে না।
আমরা আজ যাহাকে ব্রাহ্মধর্ম্ম বলিয়া জানি, দেশের লোকে তাহা এপর্য্যন্ত গ্রহণ করে নাই; কখনও যে করিবে, ইহা কল্পনা করাও অসম্ভব। কিন্তু এই ধর্ম্মের হাওয়াটা দেশের সকল সম্প্রদায়ের উপরেই স্বল্পবিস্তর পড়িয়াছে এবং ইহার সাধারণ ভাবগুলি যে অনেকেই অজ্ঞাতসারে আত্মসাৎ করিয়াছেন ও করিতেছেন, এ কথাই কি অঙ্গীকার করা সম্ভব? ব্রাহ্মসমাজ এ পর্য্যন্ত যে তত্ত্বসিদ্ধান্তের উপরে আপনার ধর্ম্মবিশ্বাসকে গড়িয়া তুলিতে চেষ্টা করিয়াছেন, সে সিদ্ধান্ত দেশের ধর্ম্মচিন্তায় এখনও কোনও স্থান পায় নাই; কখনও যে পাইবে, তারও কোনও সম্ভাবনা নাই। এ দেশে এবং অন্য দেশে এক সময়ে যারা এই যুক্তিবাদী সিদ্ধান্ত অবলম্বন করিয়াছিলেন, তাঁহারাই ক্রমে সে সিদ্ধান্তের অপূর্ণতা ও অসঙ্গতি দেখিয়া, তাহাকে বর্জ্জন করিতেছেন। কিন্তু এই সিদ্ধান্তের প্রতিষ্ঠা করিতে যাইয়া ব্রাহ্মসমাজ যে যুক্তিমার্গ আশ্রয় করেন, তাহার প্রভাবে দেশের প্রাচীন ও প্রচলিত ধর্ম্মবিশ্বাস ও ধর্ম্মসাধন যে বহুল পরিমাণে যুক্তিপ্রতিষ্ঠ ও অর্থসম্পন্ন হইয়া উঠিয়াছে, ইহাও সত্য। ব্রাহ্মসমাজ যে আদর্শে ও যে ভাবে আমাদের প্রাচীন সমাজের সংস্কারসাধনে প্রবৃত্ত হন, দেশের লোকে সর্ব্বতোভাবে তাহা অঙ্গীকার করা দূরে থাকুক,