তমঃ এই গুণত্রয় সাম্যাবস্থায় বিরাজ করে। ত্রিগুণের এই সাম্যাবস্থাই বিশ্ববিবর্ত্তনে, সৃষ্টিপ্রকরণে, homogeneityর অবস্থা। এই সাম্য ভাঙ্গিবা মাত্রই মহাবিষ্ণুর যোগনিদ্রাও ভাঙ্গিয়া যায় এবং নির্ব্বিশেষ-একাকারত্ব হইতে ক্রমে, রজঃপ্রাধান্যহেতু, সবিশেষ ও বহু-আকারসম্পন্ন বিশাল ও বিচিত্র ব্রহ্মাণ্ডের প্রকাশ আরম্ভ হয়। ইহাই differentiationএর বা ভেদ-প্রতিষ্ঠার অবস্থা। ভেদমাত্রেই বিরোধাত্মক, আর বিরোধমাত্রেই উপায়পর্য্যায়ভুক্ত; তাহার নিজস্ব কোনও লক্ষ্য বা উদ্দেশ্য নাই। বিরোধ আপনাকে বিনাশ কবিয়াই আপনার সার্থকতা লাভ করে। সুতরাং এই বিরোধের বা differentiationএর অবস্থা কদাপি স্থায়ী হইতে পারে না। ভেদের ভিতর দিয়া অভেদের প্রতিষ্ঠা হইলেই তবে সে ভেদ আপনার সার্থকতা লাভ করে। এইজন্য differentiationএর পরে integration হইবেই হইবে। এই integration একত্বের, অভেদের, কিম্বা অচিন্ত্যভেদাভেদাত্মক মহান্ একের প্রতিষ্ঠা করে; এবং এই একত্বে বা integrationএ বিবর্ত্তনপ্রণালী পূর্ণতা প্রাপ্ত হয়। Homogeneity, differentiation, integration—বিবর্ত্তনক্রিয়ার এই তিন পাদের প্রথম পাদে তমোগুণের, দ্বিতীয় পাদে রজোগুণের, তৃতীয় পাদে সত্ত্বগুণের প্রাধান্য হইয়া থাকে।
এই ত্রিপাদকে আশ্রয় করিয়াই জনসমাজ নিয়ত বিবর্ত্তিত হইতেছে। কিন্তু সমাজবিবর্ত্তনের এই ত্রিপাদচক্রে যে সমাজ-জীবনের আদি হইতে শেষ পর্য্যন্ত, কেবল একবার মাত্র ঘুরিয়া আইসে, তাহা নয়। সমাজবিবর্ত্তনের গতি কখনও কোথাও থামিয়া যায় না। সমাজ নিয়তই বিবর্ত্তিত হইতেছে। সুতরাং এই ত্রিপাদচক্রও নিয়ত ঘুরিতেছে। তমঃ রজঃ সত্ত্ব এই তিনগুণ, প্রত্যেক সমাজের জীবনে, একের পর অন্যে, বারম্বার প্রবল হইয়া, এই ত্রিপাদ চক্রের গতিবেগ রক্ষা করিতেছে। যুগে যুগে