এ সকল কি মোহের না মোক্ষের লক্ষণ? টাইট্যানিকে যাহা দেখিলাম তাহা কি জড়ত্ব না বীরত্ব?
আর এরূপ সন্দেহের কারণ এই যে আমরা য়ুরোপকে সচরাচর ইহসর্ব্বস্ব বলিয়াই মনে করি। যুরোপ ভোগের সন্ধানই পাইয়াছে, ত্যাগের নিগূঢ় তত্ত্ব এখনও লাভ করিতে পারে নাই, অনেক সময়ে আমরা এরূপই ভাবিয়া থাকি। সুতরাং টাইট্যানিকের তিরোধানে য়ুরোপ যাহা দেখাইল, তাহার প্রকৃত মর্ম্ম আমরা সহজে ধরিয়া উঠিতে পারি না। কখনো মনে হয়, আমরা যুরোপকে যাহা বুঝিয়া আসিয়াছিলাম তাহা সর্বৈব মিথ্যা। আর কখনো মনে হয়, বুঝি বা টাইট্যানিকের তিরোধানের যে কাহিনী জগতে প্রচারিত হইয়াছে, তাহা বহুল পরিমাণে কল্পিত। ফলতঃ আমাদের পূর্ব্বধারণাও একান্তই মিথ্যা নহে; আর আজ যে ছবি দেখিলাম, তাহাও নিতান্তই কল্পিত নহে। ভারতের সনাতন সভ্যতা ও সাধনা যে ত্যাগের পথ ধরিয়া যুগ যুগান্ত ব্যাপিয়া চলিয়া আসিয়াছে, যুরোপ যে সে পথেরই সন্ধান পাইয়াছে, টাইট্যানিকের তিরোধানে ইহা প্রমাণ হয় না। ভারতের পথ চিরদিনই ত্যাগের পথ। য়ুরোপের পথ চিরদিনই ভোগের পথ। ভারতের যতই কেন আত্মবিস্তৃতি জন্মাক্ না, সে কখনো একান্তভাবে য়ুরোপের ভোগের পথ ধরিতে পারিবে না। আর য়ুরোপের যতই কেন ক্ষণিক শ্মশানবৈরাগ্যের উদয় হউক না, সেও কখনো ভারতের এই প্রাচীন ত্যাগের পথ ধরিতে পারিবে না। ভারত যদি য়ুরোপের অদ্ভুত অভ্যুদয় দেখিয়া তাহার ভোগের পথ ধরিতে যায়, তাহাতে আত্মচরিতার্থ লাভ করা দূরে থাকুক, সে নিষ্ফল প্রয়াসে তাহার ভাগ্যে কেবল আত্মঘাতী পরধর্ম্ম লাভই ঘটিবে। আর য়ুরোপও যদি ভারতের প্রাচীন পারমার্থিক সম্পদের অতিলৌকিক শক্তিদর্শনে স্বধর্ম্ম পরিত্যাগ করিয়া ভারতের