পরধর্ম্ম সাধনে নিযুক্ত হয়, সে প্রয়াসও তাহার পক্ষে সাংঘাতিক হইয়াই উঠিবে।
ফলতঃ কি ভারতের কি য়ুরোপের পক্ষে এইরূপ পরধর্ম্মানুশীলনের কোনই প্রয়োজনও নাই। কারণ মানবপ্রকৃতির মৌলিক একত্বনিবন্ধন, মানুষ আপনার প্রকৃতির অনুসরণ করিয়া, নিষ্ঠাসহকারে যে পথেই চলুক না কেন, পরিণামে সেই মূল প্রকৃতিকেই প্রাপ্ত হইবে; ইহাব অন্যথা হওয়া অসম্ভব। সকল নদীই যেমন একই সাগরগর্ভে যাইয়া আপনার চরিতার্থতা লাভ করে, সেইরূপ সকল মানবীয় সাধনাই ঋজুকুটীলভাবে, নানা পথ অতিক্রম করিয়া, পরিণামে যে মনুষ্যত্বে মানবপ্রকৃতিমাত্রেরই সার্থকতা লাভ হয় সেই মনুষ্যত্বকেই প্রাপ্ত হয়। য়ুরোপের প্রবাদে একটা কথা আছে—সকল পথই চরমে রোম নগরে যাইয়া পৌঁছায়। সেইরূপ সার্ব্বজনীন মানব ইতিহাসেরও সিদ্ধান্ত এই যে, সর্ব্ব— প্রকারের মানবীয় সাধনাই চরমে একই পরম মনুষ্যত্ব বস্তুকেই ফুটাইয়া তুলে। ত্যাগে যেমন ত্যাগের পরিসমাপ্তি হয় না, নিষ্কাম ভোগে যাইয়াই ত্যাগ আপনার সার্থকতা লাভ করে; সেইরূপ ভোগও আপনার চরিতার্থতার জন্যই ক্রমে ত্যাগের পথ আশ্রয় করিতে বাধ্য হয় এবং আদিতে যে ভোগ কাম্যবিষয়ের অনুসরণ করিয়া চলে, ক্রমে ত্যাগের পথ ধরিয়া তাহাকেই নিষ্কাম কর্ম্মযোগের মধ্যে আত্মচরিতার্থতা লাভ করিতে হয়।
আধুনিক য়ুরোপীয় সভ্যতার আত্যন্তিক ভোগলালসা আপনার চরিতার্থতার জন্যই যে সকল বর্মনিয়মাদির প্রতিষ্ঠা করিতে বাধ্য হইয়াছে, টাইট্যানিকের তিরোধানকালে তাহারই শ্রেষ্ঠতম ফল আমরা প্রত্যক্ষ করিয়াছি। আধুনিক ভোগের আয়োজন করিতে হইলে, বহুলোকের সমবেত শ্রম ও সাহচর্য্য প্রয়োজন হয়। টাইট্যানিক আপনি তাহার দৃষ্টান্ত স্থল। এত বড় বিপুলকায় অর্ণবযান পরিচালনার জন্য বহুলোকের