প্রভাব ম্লান এবং আধ্যাত্মিক জীবনের শক্তি ও সত্য ক্ষয় পাইতে আরম্ভ করে।
আধুনিক ভারতে ধর্ম্ম ও সমাজসংস্কার
ইংরেজিশিক্ষার সঙ্গে সঙ্গে আমাদের নব্যশিক্ষিত সম্প্রদারের উপরেও এই য়ুরোপীয় স্বাধীনচিন্তার ও যুক্তিবাদের প্রভাব অত্যন্ত প্রবল হইয়া উঠে এবং তাঁহাদের প্রাণে স্বাধীনতার নামে একটা অসংযত ব্যক্তিত্বাভিমান জাগিয়া আমাদের বর্ত্তমান ধর্ম্ম ও সমাজসংস্কারের সূত্রপাত করে। এই ধর্ম্ম ও সমাজসংস্কার-চেষ্টার বহুবিধ ভ্রম-ত্রুটী এবং অসম্পূর্ণতাসত্ত্বেও আধুনিক ভারতের ব্যক্তিগত ও সামাজিক জীবনগঠনের জন্য তাহা যে একান্তই প্রয়োজন ছিল, কিছুতেই এ কথা অস্বীকার করা যায় না। পূর্ব্বসংস্কারবর্জ্জিত না হইলে কেহ এ জগতে সত্যের সাধনা করিতে পারে না। এই সংস্কারবর্জ্জনের নামই চিত্তশুদ্ধি। কি ব্যক্তি কি সমাজ উভয়েরই আত্মচরিতার্থতালাভের জন্য এই চিত্তশুদ্ধির আবশ্যক হয়। ‘নেতি’র ভিতর দিয়াই ‘ইতি’তে যাইতে হয়। ব্যতিরেকী পন্থার পরেই অন্বয়ী পন্থার প্রতিষ্ঠা। ইহাই আমাদিগের প্রাচীন বেদান্তের শিক্ষা। ইংরেজ মনীষী কার্লাইল, Through Eternal Nay to Eternal Yea, এই সূত্রে অমাদের এই প্রাচীন উপদেশেরই পুনরাবৃত্তি করিয়াছেন। সমাজের সকল অযৌক্তিক বন্ধন ছেদন করিতে উদ্যত হইয়া, ধর্ম্মের শাস্ত্রবদ্ধ সকল অনুশাসন অগ্রাহ্য করিয়া, কেবল আপনার ব্যক্তিগত বিচারবুদ্ধি ও সংজ্ঞানের উপরে দাঁড়াইতে যাইয়া, আমাদিগের দেশের আধুনিক শিক্ষা-প্রাপ্ত সম্প্রদায় এই নেতি বা “না”-এর পথ ধরিয়াই, নিজেদের ও সমাজের চিত্তশুদ্ধিসাধনের চেষ্টা করিয়াছিলেন। আধুনিক বাঙ্গালী শিক্ষিত সমাজ যেরূপ আগ্রহ সহকারে যতটা স্বার্থত্যাগ স্বীকার