বসু মহাশয় তখন জীবিত ছিলেন। অশ্বিনীকুমার প্রায়ই দেওঘরে যাইয়া বসু মহাশয়ের সহিত মিলিত হইতেন। অশ্বিনীকুমারের কলিকাতায় আসিবার কথা শুনিয়া, রাজনারায়ণ বাবু তাঁহাকে এমন আত্মঘাতী কর্ম্ম করিতে পুনঃপুনঃ নিষেধ করেন। অশ্বিনীকুমার যদি এ নিষেধ না শুনিতেন, আমাদের দশজনের মতন যদি তিনি কলিকাতায় আসিয়া বসবাস করিতেন, তাহা হইলে, বাংলার আধুনিক কর্ম্মজীবনের ইতিহাসে তিনি আজ যে স্থান অধিকার করিয়া বসিয়াছেন, সে স্থান কিছুতেই পাইতেন না, ইহা স্থির নিশ্চয়।
প্রথম যৌবনেই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা শেষ করিয়া অশ্বিনীকুমার বরিশালে যাইয়া স্বদেশসেবায় জীবন উৎসর্গ করেন। সে সময়ে লাট রিপন্ প্রবর্ত্তিত স্থানীয় স্বায়ত্তশাসন বা Local Self-governmentএর খুব প্রাদুর্ভাব ছিল। ইংরেজি শিক্ষিত সমাজ, বিশেষতঃ দেশের ব্যবহারজীবিগণ এই স্বায়ত্তশাসনেতেই দেশের ভবিষ্যতের স্বাধীনতার পত্তন হইল ভাবিয়া উৎসাহ সহকারে মিউনিসিপ্যালিটি এবং ডিস্ট্রীক্ট্বোর্ডের কার্যে প্রবৃত্ত হন। অশ্বিনীকুমারও সেই পথ ধরিয়াই নিজের সহরের এবং জেলার সেবাতে নিযুক্ত হন। এবং ক্রমে ওকালতী পরিত্যাগ করিয়া লোকশিক্ষার কার্যে প্রবৃত্ত হন। যতদূর আমার মনে আছে, বোধ হয় তিনি বহুকাল ধরিয়া আপনার প্রতিষ্ঠিত বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষকের কাজ করিয়াছিলেন। ক্রমোন্নতি সহকারে অশ্বিনীকুমারের উচ্চশ্রেণীর ইংরেজি বিদ্যালয় কলেজে পরিণত হয়। এবং অশ্বিনীকুমার একজন মনীষাসম্পন্ন স্বার্থত্যাগী লোকশিক্ষকের খ্যাতিলাভ করেন।
বিদ্যাসাগর মহাশয়ই সর্ব্বপ্রথমে বিশেষভাবে আমাদের মধ্যে অল্প বেতন লইয়া উচ্চ ইংরেজি শিক্ষা দিবার ব্যবস্থা করেন। আজিকালি দেশে এ শ্রেণীর অনেকগুলি বে-সরকারী স্কুল-কলেজ হইয়াছে, কিন্তু এক