পক্ষে যাহা পাপ, দেবতার পক্ষে তাহা দোষাবহ হয় না। জগতের সকল কর্ম্মের মূল কর্তা যখন ঈশ্বর, তখন সকল কর্ম্মাকর্ম্মই তাঁহার কৃত। তিনি আদি কারণ, তিনি অনাদি কারণ। তিনি সর্ব্ব-কারণ। কর্ম্মকর্ম্ম, ধর্মাধর্ম্ম, সকলেরই মূল ও কর্ত্তা তিনি। এ অবস্থায় তিনি জীবের আদর্শ হইতে পারেন কি? মানুষ ভগবানের অনুকরণ করিতে গেলে, তার ধর্ম্মাধর্ম্ম সকলই লোপ পায়। এইজন্য হিন্দু এমন কথা কখনও বলে না। হিন্দু ভগবানকেও যেমন আপনার জীবনের আদর্শ বলিয়া গ্রহণ করে না, তার গুরুকেও সেইরূপ আদর্শরূপে ভাবে না। গুরুর উপদেশই মান্য, তাঁর কর্ম্ম অনুকরণীয় নহে। শিষ্যকে তার আপন অধিকার মতন তিনি চালাইয়া লইয়া যান, আর নিজে আপনার অধিকার মতন চলিয়া থাকেন। ভাগবতী তনু লাভ না করিলে কেহ সদ্গুরু হইতে পারেন না। আর যাঁরা ভাগবতী তনুলাভ করিয়া সংসারে ভগবানের লীলাবিগ্রহরূপে বিচরণ করিয়া জীবকে ভগবানের দিকে লইয়া যান, স্বয়ং ভগবানের চরিত্র যেমন প্রাকৃতজনের অনুকরণীয় নহে, তাঁহাদের চরিত্রও সেইরূপ লোকের অনুকরণীয় হয় না। খৃষ্টীয় দশ— আজ্ঞার মাপকাঠির দ্বারা এ সকল লোকোত্তর মহাপুরুষের চরিত্রের কালি কষা যায় না। লৌকিক নীতির বন্ধনে তাঁরা আবদ্ধ নহেন, তাঁরা নিজেরাই এ সকল নীতির প্রতিষ্ঠা করেন। গুরুচরণে একান্ত ভাবে আত্মসমর্পণ করিয়া তাঁরা ভিতরে যে প্রেরণা প্রেরণ করেন, ও বাহিরে যে সকল ব্যবস্থা ও ঘটনার যোগাযোগ সাধন করেন, তাহার অনুগমন করাই শিষ্যের একমাত্র কর্তব্য। কিন্তু ইংরেজি শিখিয়া আমাদের পক্ষে এরূপ বশ্যতা স্বীকার করা কঠিন হইয়া পড়িয়াছে। তারই জন্য আমরা গুরুচরিত্রের অনুকরণ করিতে যাইয়া পদে পদে ভয়াবহ পরধর্ম্মের অনুসরণ করিয়া থাকি।
আমাদের সকলেরই এই দশা। হিন্দুয়ানী ও খৃষ্টীয়ানীর একটা