যেন নিকটেই কোথাও পড়ল। মাটী যেন চিরে ফেঁড়ে গেল— আকাশটাও যেন সেই সঙ্গে ফাটলো।
আলভারেজ মাটী থেকে উঠবার চেষ্টা করতে করতে বল্লে— ভূমিকম্প!
কিন্তু পরক্ষণেই তারা দেখে বিস্মিত হোল, রাত্রির অমন ঘুটঘুটে অন্ধকার হঠাৎ দূর হয়ে, পঞ্চাশহাজার বাতির এমন বিজলি আলো জ্বলে উঠল কোথা থেকে?
তারপর তাদের নজরে পড়ল, দূরের সেই পাহাড়ের চূড়াটার দিকে। সেখানে যেন একটা প্রকাণ্ড অগ্নিলীলা শুরু হয়েচে। রাঙা হয়ে উঠেচে সমস্ত দিগন্ত সেই প্রলয়ের আলোয়, আগুন-রাঙা মেঘ ফুঁসিয়ে উঠেচে পাহাড়ের চূড়ো থেকে দু-হাজার, আড়াই হাজার ফুট পর্য্যন্ত উঁচুতে— সঙ্গে সঙ্গে কি বিশ্রী নিঃশ্বাস রোধকারী গন্ধকের উত্কট গন্ধ বাতাসে!
আলভারেজ সেদিকে চেয়ে ভয়ে বিস্ময়ে বলে উঠল— আগ্নেয়গিরি! সাণ্টা আনা গ্রাৎসিয়া ডা কর্ডোভা!
কি অদ্ভুত ধরনের ভীষণ সুন্দর দৃশ্য! কেউ চোখ ফিরিয়ে নিতে পারলে না ওরা খানিকক্ষণ। লক্ষটা তুবড়ি এক সঙ্গে জ্বলচে, লক্ষটা রঙমশালে যেন এক সঙ্গে আগুন দিয়েছে, শঙ্করের মনে হল। রাঙা আগুনের মেঘ মাঝে মাঝে নীচু হয়ে যায়, হঠাৎ যেমন আগুনে ধুনো পড়লে দপ্ করে জ্বলে ওঠে, অমনি দপ্ করে হাজার ফুট ঠেলে ওঠে। আর সেই সঙ্গে হাজারটা বোমাফাটার আওয়াজ।