পাতা:চাঁদের পাহাড়.djvu/১৩০

এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
১২২
চাঁদের পাহাড়

নেই, সংজ্ঞা নেই। সকাল হবার সঙ্গে হঠাৎ যেন তার চেতনা ফিরে এল। শঙ্করের দিকে বিস্ময়ের ও অচেনার দৃষ্টিতে চেয়ে দেখলে, যেন এর আগে সে কখনো শঙ্করকে দেখেনি। তারপর আবার চোখ বুঁজল। দুপুরের পর খুব সম্ভবতঃ নিজের মাতৃভাষায় কী সব বকতে সুরু করল, শঙ্কর এক বর্ণও বুঝতে পারলে না। বৈকালের দিকে সে হঠাৎ শঙ্করের দিকে চাইলে। চাইবার সঙ্গে সঙ্গে শঙ্করের মনে হোল, সে ওকে চিনতে পেরেচে। এইবার ইংরাজীতে বল্লে— শঙ্কর! এখনো বসে আছ? তাঁবু ওঠাও, চল যাই— তারপর অপ্রকৃতিস্থের মতো নির্দ্দেশহীন ভঙ্গিতে হাত তুলে বল্লে— রাজার ঐশ্বর্য লুকোনো রয়েচে ঐ পাহাড়ের গুহার মধ্যে— তুমি দেখতে পাচ্চ না— আমি দেখতে পাচ্চি। চল আমরা যাই— তাঁবু ওঠাও— দেরী কোরো না…

 এই আলভারেজের শেষ কথা।

* * * *
* * *

 তারপর কতক্ষণ শঙ্কর স্তব্ধ হয়ে বসে রইল। সন্ধ্যা হোল, একটু একটু করে সমগ্র বনানী ঘন অন্ধকারে ডুবে গেল।

 শঙ্করের তখন চমক ভাঙল। সে তাড়াতাড়ি উঠে আগে আগুন জ্বাললে, তারপর দুটো রাইফেলে টোটা ভরে, তাঁবুর দোরের দিকে বন্দুকের নল বাগিয়ে, আলভারেজের মৃতদেহের পাশে একখানা সতরঞ্জির ওপর বসে রইল।