পাতা:চাঁদের পাহাড়.djvu/১৩২

এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
১২৪
চাঁদের পাহাড়

যেন প্রেতের মতো দেখাচ্চে, অত বড় ঝড় বৃষ্টিতেও জোনাকির ঝাঁক জ্বলচে। সম্মুখে বন্ধুর মৃতদেহ। ভয় পেলে চলবে না! সাহস আনতেই হবে, নতুবা ভয়েই সে মারা যাবে। সাহস আনবার প্রাণপণ চেষ্টায় সে রাইফেল দুটীর দিকে মনোযোগ নিবদ্ধ করলে। একটা উইনচেষ্টার, অপরটী ম্যানলিকার - দুটোরই ম্যাগাজিনে টোটা ভর্ত্তি। এমন কোনো শরীরধারী জীব নেই, যে এই দুই শক্তিশালী অতি ভয়ানক মারণাস্ত্রকে উপেক্ষা করে আজ রাত্রে অক্ষতদেহে তাঁবুতে ঢুকতে পারে।

 ভয় ও বিপদ মানুষকে সাহসী করে। শঙ্কর সারারাত সজাগ পাহারা দিল। পরদিন সকালে আলভারেজের মৃতদেহ সে একটা বড় গাছের তলায় সমাধিস্থ করলে এবং দুখানা গাছের ডাল ক্রুশের আকারে শক্ত লতা দিয়ে বেঁধে সমাধির ওপর তা পুঁতে দিলে।

 আলভারেজের কাগজপত্রের মধ্যে ওপর্টো খনি বিদ্যালয়ের একটা ডিপ্লোমা ছিল ওর নামে। তাদের শেষ পরীক্ষায় আলভারেজ সসম্মানে উত্তীর্ণ হয়েচে। ওর কথাবার্ত্তায় অনেক সময়ই শঙ্করের সন্দেহ হোত যে, সে নিতান্ত মূর্খ, ভাগ্যানেষী, ভবঘুরে নয়।

 লোকালয় থেকে বহুদূরে এই জনহীন, গহণ অরণ্যে ক্লান্ত আলভারেজের রত্নানুসন্ধান শেষ হোল। তার মত লোকেরা রত্নের কাঙাল নয়, বিপদের নেশায় পথে পথে ঘুরে বেড়ানোই