পাতা:চাঁদের পাহাড়.djvu/১৪০

এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
১৩২
চাঁদের পাহাড়

সূচীভেদ্য। সেই দুর্ণিবীক্ষ্য অন্ধকারে এক পা অগ্রসর হওয়া অসম্ভব। পথ খুঁজে বার করা তো দূরের কথা।

 সারাদিন কেটে গেল - ঘড়িতে সন্ধ্যা সাতটা। এদিকে টর্চ্চের আলো রাঙা হয়ে আসচে ক্রমশঃ। ভীষণ গুমট গরম গুহার মধ্যে তা' ছাড়া পানীয় জল নেই। পাথরের দেওয়াল বেয়ে যে জল চুঁয়ে পড়চে, তা' আস্বাদ কষা, ক্ষার, ঈষৎ লোনা। তার পরিমাণও বেশী নয়। জিব দিয়ে চেটে খেতে হয় দেওয়ালের গা থেকে।

 বাইরে অন্ধকার হয়েচে নিশ্চয়ই, সাড়ে সাতটা বাজলো। আটটা, নটা, দশটা। তখনও শঙ্কর পথ হাতড়াচ্চে। টর্চ্চের পুরোণো ব্যাটারি জ্বলচে সমানে বেলা তিনটে থেকে, এইবার সে এত ক্ষীণ হয়ে এসেচে যে, শঙ্কর ভয়ে আরও উন্মাদের মত হয়ে উঠল। এই আলো যতক্ষণ, তার প্রাণের ভরসাও ততক্ষণ - নতুবা এই রৌরব নরকের মত মহা অন্ধকারে পথ খুঁজে পাবার কোনো আশা নেই - স্বয়ং আলভারেজও পারতো না।

 টর্চ্চ নিবিয়ে, ও চুপ করে একখানা পাথরের ওপর বসে রইল। এ থেকে উদ্ধার পাওয়া যেতেও পারতো, যদি আলো থাকতো - কিন্তু অন্ধকারে সে কি করবে এখন? একবার ভাবলে, রাত্রিটা কাটুক না, দেখা যাবে এখন। পরক্ষণেই মনে হোল - তাতে আর কি সুবিধে হবে? এখানে দিন রাত্রি সমান।