পাতা:চাঁদের পাহাড়.djvu/১৪২

এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
১৩৪
চাঁদের পাহাড়

আবার চলল, আলভারেজের শিষ্য সে, নিশ্চেষ্ট ভাবে হাত পা কোলে করে বসে কখনই মরবে না।...সে পথ খুঁজবে, খুঁজবে, যতক্ষণ বেঁচে আছে।

 আশ্চর্য্য, সে নদীটাই বা কোথায় গেল?...গুহার মধ্যে গোলোকধাঁধাঁয় ঘুরবার সময়ে জলধারাকে সে কোথায় হারিয়ে ফেলেচে। নদী দেখতে পেলে হয় তো উদ্ধার পাওয়াও যেতে পারে, কারণ তার এক মুখ যেদিকেই থাক, একটা মুখ আছে গুহার বাইরে। কিন্তু নদী তো দূরের কথা, একটা অতি ক্ষীণ জলধারার সঙ্গেও আজ তিন দিন পরিচয় নেই! জল অভাবে শঙ্কর মরতে বসেচে, কষা, লোনা, বিস্বাদ জল চেটে চেটে তার জিব ফুলে উঠেচে, তৃষ্ণা তাতে বেড়েচে ছাড়া কমে নি।

 পাথরের দেওয়াল হাতড়ে শঙ্কর খুঁজতে লাগলো, ভিজে দেওয়ালের গায়ে কোথাও শেওলা জন্মেছে কি না - খেয়ে প্রাণ বাঁচাবে। না তাও নেই! পাথরের দেওয়াল সর্ব্বত্র অনাবৃত - মাঝে মাঝে ক্যালসিয়াম কার্ব্বোনেটের পাতলা সর পড়েচে, একটা ব্যাঙের ছাতা, কি শেওলাজাতীয় উদ্ভিদও নেই। সূর্য্যের আলোর অভাবে উদ্ভিদ এখানে বাঁচতে পারে না।

 আরও একদিন কেটে রাত এল। এত ঘোরাঘুরি করেও কিছু সুবিধে হচ্চে বলে তো বোধ হয় না। ওর মনে হতাশা ঘনিয়ে এসেচে। আরও সে কি চলবে, কতক্ষণ চলবে? এতে কোন ফল নেই, এ চলার শেষ নেই। কোথায় সে চলচে