পাতা:চাঁদের পাহাড়.djvu/১৭২

এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
১৬৪
চাঁদের পাহাড়

কেউ মাথার ওপর ঘুরচে, কেউ বা দূরে দূরে গাছের ডালে কি পাথরের ওপরে বসে খুব ধীরভাবে প্রতীক্ষা করচে। ওরা যেন বলচে— কোথায় যাবে বাছাধন? যে কদিন লাফালাফি করবে, করে নাও। আমরা বসি, এমন কিছু তাড়াতাড়ি নেই আমাদের।

 শঙ্করের খিদে নেই। খাবার ইচ্ছেও নেই। তবুও সে গুলি করে একটা শকুনি মারলে। রৌদ্র ভীষণ চড়েচে, আগুন-তাতা পাথরের গায়ে পা রাখা যায় না। এ পর্ব্বতও মরুভূমির সামিল, খাদ্য এখানে মেলে না, জলও না। সে মরা শকুনিটা নিয়ে এসে আগুন জ্বেলে ঝলসাতে বসলো। এর আগে মরুভূমির মধ্যেও সে শকুনির মাংস খেয়েচে। এরাই এখন প্রাণ ধারণের একমাত্র উপায়, আজ ও খাচ্চে ওদের, কাল ওরা খাবে ওকে। শকুনিগুলো এসে আবার মাথার উপর জুটেচে।

 তার নিজের ছায়া পড়েচে পাথরের গায়ে, সে নির্জ্জন স্থানে শঙ্করের উদ্ভ্রান্ত মনে ছায়াটা যেন একজন সঙ্গী মনে হোল। বোধহয়, ওর মাথা খারাপ হয়ে আসচে। কারণ বেঘোর অবস্থায়, ও কত বার নিজের ছায়ার সঙ্গে কথা বলতে লাগলো, কতবার পরক্ষণের সচেতন মুহূর্ত্তে নিজের ভুল বুঝে নিজেকে সামলে নিলে।

 সে পাগল হয়ে যাচ্চে নাকি? জ্বর হয়নি তো? তার মাথার মধ্যে ক্রমশঃ গোলমাল হয়ে যাচ্চে সব। আলভারেজ…