পাতা:চাঁদের পাহাড়.djvu/২১

এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
চাঁদের পাহাড়
১৩

শিকার ফেলে পালিয়েচে। সন্ধ্যার পূর্ব্বেই কুলীটা মারা গেল।

 তাঁবুর চারিপাশের লম্বা ঘাস অনেকদূর পর্য্যন্ত কেটে সাফ্‌ করে দেওয়া হল পরদিনই। দিনকতক সিংহের কথা ছাড়া তাঁবুতে আর কোনো গল্পই নেই। তারপর মাসখানেক পরে ঘটনাটা পুরাণো হয়ে গেল, সে কথা সকলের মনে চাপা পড়ে গেল। কাজকর্ম্ম আবার বেশ চলল।

 সেদিন দিনে খুব গরম। সন্ধ্যার একটু পরেই কিন্তু ঠাণ্ডা পড়ল। কুলীদের তাঁবুর সামনে অনেক কাঠকুটো জ্বালিয়ে আগুন করা হয়েচে। সেখানে তাঁবুর সবাই গোল হয়ে বসে গল্পগুজব করচে। শঙ্করও সেখানে আছে, সে ওদের গল্প শুনচে এবং অগ্নিকুণ্ডের আলোতে ‘কেনিয়া মর্ণিং নিউজ্‌’ পড়চে। খবরের কাগজখানা পাঁচদিনের পুরোণো। কিন্তু এ জনহীন প্রান্তরে তবু এখানেতে বাইরের দুনিয়ার যা কিছু একটা খবর পাওয়া যায়।

 তিরুমল আপ্পা বলে একজন মাদ্রাজী কেরাণীর সঙ্গে শঙ্করের খুব বন্ধুত্ব হয়েছিল। তিরুমল্‌ তরুণ যুবক, বেশ ইংরাজি জানে, মনেও খুব উৎসাহ! সে বাড়ী থেকে পালিয়ে এসেচে অ্যাড্‌ভেঞ্চারের নেশায়। শঙ্করের পাশে বসে সে আজ সন্ধ্যা থেকে ক্রমাগত দেশের কথা, তার বাপ মায়ের কথা, তার ছোট বোনের কথা বলচে। ছোট বোনকে সে বড় ভালবাসে। বাড়ী ছেড়ে এসে তার কথাই তিরুমলের বড় মনে