পাতা:চাঁদের পাহাড়.djvu/২৮

এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
২০
চাঁদের পাহাড়

বাংলাদেশের পাড়াগাঁয়ে আছে—চোখ বুজে সে নিজের গ্রামটা ভাববার চেষ্টা করে, তাদের ঘরের কোণের সেই বিলিতি আমড়া গাছটা ভাববার চেষ্টা করে—আজও সে একবার থম্‌কে দাঁড়িয়ে তাড়াতাড়ি চোখ বুঁজলে।

 কি চমৎকার লাগে! কোথায় সে? সেই তাদের গাঁয়ের বাড়ির জানলার পাশে তক্তপোষে শুয়ে? বিলিতি আমড়া গাছটার ডালপালা চোখ খুললেই চোখে পড়বে? ঠিক? দেখবে সে চোখ খুলে?

 শঙ্কর ধীরে ধীরে চোখ খুললে।

 অন্ধকার প্রান্তর। দূরে সেই বড় বাওবাব গাছটা অস্পষ্ট অন্ধকারে দৈত্যের মত দাঁড়িয়ে আছে। হঠাৎ তার মনে হোল সাম্‌নের একটা ছাতার মতো গোল খড়ের নীচু চালার উপরে একটা কি যেন নড়চে। পরক্ষণেই সে ভয়ে ও বিস্ময়ে কাঠ হয়ে গেল।

 প্রকাণ্ড একটা সিংহ খড়ের চাল থাবা দিয়ে খুঁচিয়ে গর্ত্ত করবার চেষ্টা করচে ও মাঝে মাঝে নাকটা চালের গর্ত্তের কাছে নিয়ে গিয়ে কিসের যেন ঘ্রাণ নিচ্চে!

 তার কাছ থেকে চালাটার দূরত্ব বড় জোর বিশ হাত।

 শঙ্কর বুঝলে সে ভয়ানক বিপদগ্রস্ত। সিংহ চালার খড় খুঁচিয়ে গর্ত্ত করতে ব্যস্ত, সেখান দিয়ে ঢুকে সে মানুষ নেবে—শঙ্করকে সে এখনো দেখতে পায়নি। তাঁবুর বাইরে কোথাও লোক নেই, সিংহের ভয়ে বেশী রাত্রে কেউ বাইরে