পাতা:চাঁদের পাহাড়.djvu/৫৭

এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
চাঁদের পাহাড়
৪৯

আর ফেরেনি। আর একবার একজন তোমাদের মতো সাদা মানুষ এসেছিল, সেও অনেক, অনেক চাঁদ আগে। আমরা দেখিনি, আমাদের বাপ-ঠাকুরদাদাদের আমলের কথা। সে গিয়েও আর ফেরেনি।

কাফির গ্রাম থেকে বার হয়েই পথে আমরা ম্যাপ মিলিয়ে দেখলাম— দূরের ধোঁয়া ধোঁয়া অস্পষ্ট ব্যাপারটা হচ্চে রিখটারসভেল্ড পর্বতশ্রেণী, দক্ষিণ-আফ্রিকার সর্বাপেক্ষা বন্য, অজ্ঞাত, বিশাল ও বিপদসঙ্কুল অঞ্চল। দু-একজন দুর্ধর্ষ দেশ-আবিষ্কারক বা ভৌগোলিক বিশেষজ্ঞ ছাড়া, কোনো সভ্য মানুষ সে অঞ্চলে পদার্পণ করেনি। ঐ বিস্তীর্ণ বনপর্ব্বতের অধিকাংশ স্থানই সম্পূর্ণ অজানা, তার ম্যাপ নেই, তার কোথায় কি আছে কেউ বলতে পারে না।

জিম কার্টার ও আমার রক্ত চঞ্চল হয়ে উঠল— আমরা দু’জনেই তখনি স্থির করলাম ওই অরণ্য ও পর্ব্বতমালা আমাদেরই আগমন প্রতীক্ষায় তার বিপুল রত্নভাণ্ডার লোকচক্ষুর আড়ালে গোপন করে রেখেছে, ওখানে আমরা যাবোই।

কাফির গ্রাম থেকে রওনা হবার প্রায় সতে্রো দিন পরে আমরা পর্ব্বতশ্রেণীর পাদদেশে নিবিড় বনে প্রবেশ করলাম।

পূর্ব্বেই বলেচি দক্ষিণ-আফ্রিকার অত্যন্ত দুর্গম প্রদেশে এই পর্ব্বতশ্রেণী অবস্থিত। জঙ্গলের কাছাকাছি কোনো কাফির বস্তি পর্য্যন্ত আমাদের চোখে পড়ল না। জঙ্গল দেখে মনে হোল কাঠুরিয়ার কুঠার আজ পর্য্যন্ত এখানে প্রবেশ করেনি।