লোক হিসেবে ভালোই বটে। একবার ইউগাণ্ডাতে একজন শিখ আমার প্রতি এমন সুন্দর আতিথ্য দেখিয়েছিল, তা কখনও ভুলতে পারবো না। আজ তোমরা এস, রাত সামনে, আমার এখানেই রাত্রি যাপন কর। এটা গবর্ণমেণ্টের ডাকবাংলো, আমিও তোমাদের মতো সারাদিন পথ চলে বিকেলের দিকে এসে উঠেচি।
সাহেবের একটি ছোট গ্রামোফোন ছিল, সন্ধ্যার পরে টিনবন্দী বিলাতী টোমাটোর ঝোল ও সার্ডিন মাছ সহযোগে সান্ধ্যভোজন সমাপ্ত করবার পরে সবাই বাংলোর বাইরে ক্যাম্প চেয়ারে শুয়ে রেকর্ডের পর রেকর্ড শুনে যাচ্চে, এমন সময় অল্প দূরে সিংহের গর্জ্জন শোনা গেল। বোধ হল মাটির কাছে মুখ নামিয়ে সিংহ গর্জ্জন করচে—কারণ মাটী যেন কেঁপে কেঁপে উঠচে। সাহেব বল্লে—টাঙ্গানিয়াকায় বেজায় সিংহের উপদ্রব আর বড় হিংস্র এরা। প্রায় অধিকাংশই মানুষখেকো। মানুষের রক্তের আস্বাদ একবার পেয়েচে, এখন মানুষ ছাড়া আর কিছু চায় না।
শঙ্কর ভাবলে খুব সুসংবাদ বটে। ইউগাণ্ডা রেলওয়ে তৈরী হবার সময় সে সিংহের উপদ্রব কাকে বলে খুব ভালো করেই দেখেচে।
পরদিন সকালে ওরা আবার রওনা হল। সাহেব বলে দিলে সূর্য্য উঠে গেলে খুব সাবধানে থাকবে। স্লিপিং সিকনেসের মাছি রোদ উঠলেই জাগে, গায়ে যেন না বসে।