দীর্ঘ দীর্ঘ ঘাসের বনের মধ্যে দিয়ে সুঁড়িপথ। আলভারেজ বল্লে—খুব সাবধান, এই সব ঘাসের বনেই সিংহের আড্ডা; বেশী পেছনে থেকো না।
আলভারেজের বন্দুক আছে, এই একটা ভরসা। আর একটা ভরসা এই যে আলভারেজ, যাকে বলে ‘ক্র্যাকশট’ তাই। অর্থাৎ তার গুলি বড় একটা ফসকায় না। কিন্তু অত বড় অব্যর্থ লক্ষ্য শিকারীর সঙ্গে থেকেও শঙ্কর বিশেষ ভরসা পেলে না, কারণ ইউগাণ্ডার অভিজ্ঞতা থেকে সে জানে, সিংহ যখন যাকে নেবে এমন সম্পূর্ণ অতর্কিতেই নেবে যে, পিঠের রাইফেলের চামড়ার স্ট্র্যাপ খুলবার অবকাশ পর্য্যন্ত দেবে না।
সেদিন সন্ধ্যা হবার ঘণ্টাখানেক আগে দূর বিস্তীর্ণ প্রান্তরের মধ্যে রাত্রে বিশ্রামের জন্যে স্থান নির্ব্বাচন করে নিতে হল। আলভারেজ বল্লে—সামনে কোনো গ্রাম নেই। অন্ধকারের পর এখানে পথ চলা ঠিক নয়।
একটা সুবৃহৎ বাওবাব গাছের তলায় দু-টুকরো কেম্বিস ঝুলিয়ে ছোট্ট একটা তাঁবু খাটানো হল। কাঠকুটো কুড়িয়ে আগুন জ্বালিয়ে রাত্রের খাবার তৈরি করতে বসল শঙ্কর। তারপর সমস্ত দিন পরিশ্রমের পরে দু’জনেই শুয়ে ঘুমিয়ে পড়ল।
অনেক রাত্রে আলভারেজ ডাকলে—শঙ্কর, ওঠো।
শঙ্কর ধড়মড় করে বিছানায় উঠে বসল।
আলভারেজ বল্লে—কি একটা জানোয়ার তাঁবুর চারপাশে ঘুরচে—বন্দুক বাগিয়ে রাখো।